৬ দেশের ১০ নাট্যদলের অংশগ্রহণে নিউইয়র্কে ৪ দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসব’র লগো উম্মোচন

নিজস্ব প্রতিবেদক   প্রিন্ট
রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫   সর্বশেষ আপডেট : ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ

৬ দেশের ১০ নাট্যদলের অংশগ্রহণে নিউইয়র্কে ৪ দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসব’র লগো উম্মোচন

বিশ্বব্যাপী অভিবাসী নাট্যশিল্পীদের মাঝে একটি কার্যকর বোঝাপড়া ও যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি বিশ্ব নাট্যপরিমন্ডলে বাংলা নাটকের মর্যাদা সমুন্নত করার অভিপ্রায়ে সামনের বছরের ৯ অক্টোবর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ৪দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসব নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে। ‘উৎসবে আনন্দে প্রতিবাদে বাংলা থিয়েটার’ স্লোগানে ‘অভিবাসের নাটক ২০২৬’ শীর্ষক এ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, সউদি আরব থেকে ১০টি নাট্য দল অংশগ্রহণ করবে। তবে প্রস্তুতির এই দীর্ঘ সময়ে নিশ্চয়ই আরো কিছু নাট্য সংগঠনের সম্পৃক্তি ঘটবে এই উৎসবে-এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয় ৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত উৎসবের লগো উম্মোচনী অনুষ্ঠানে। এ সময় কেন এমন আয়োজন তার প্রেক্ষাপট উপস্থাপন ছাড়াও উৎসবের জন্যে গঠিত দুটি কমিটির কর্মকর্তাগণের নাম ঘোষণা করা হয়। উৎসব নির্বাহী সকমিটির কনভেনর হচ্ছেন বিটিএর মোহাম্মদ কবির, সদস্য-সচিব ড্রামা সার্কেলের আবির আলমগীর। অর্থ ব্যবস্থাপনা-শামিম মামুন লিটন এবং সদস্যরা হলেন রোকেয়া রফিক বেবি, জহির মাহমুদ, ডা. ফারুক আজম, সারোয়ার হারুন, মিথুন আহমেদ, সৈয়দ জাকির আহমেদ রণি, সীতেশ ধর, এজাজ আলম এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও সমন্বয়ক-শামসুল আলম বকুল। সদস্যগণের মধ্যে আরো আছেন আলমগীর চঞ্চল, আহসান উল্লাহ, আনিকা মাহিন, আনোয়ার সেলিম, বাবর খাদেমী, বসুনিয়া সুমন, চন্দন চৌধুরী, জেফ হোসেন, কান্তা আলমগীর, লায়লা ফারজানা, মিল্টন আহমেদ, নজরুল ইসলাম, শারমিন রেজা ইভা, প্রতিমা সুমি, রিপা আহমেদ, রিপন শওকত, স্বাধীন মজুমদার, শিরিন বকুল, সফিউল আলম, স্বপ্না কাউসার, সুলতানা খান, শেখ তানভির আহমদ, সুলদান বোখারী, তাহমিনা মোস্তফা এবং জিয়াউল হাসান।

নাট্যাভিনেত্রী শারমিন রেজা ইভার সঞ্চালনায় এবং ঢাক ও ঢোলের বাদ্যে মনোরম এক পরিবেশে লগো উম্মোচনী পর্বে সূচনা বক্তব্য রাখেন নাট্য ব্যক্তিত্ব শামসুল আলম বকুল। তিনি জানান, এই উৎসবের ফাঁকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নাট্যকর্মীদের একটি প্রতিনিধি সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হবে। এ উৎসবের আয়োজক হচ্ছে সম্মিলিতভাবে নিউইয়র্কের নাট্য সংগঠন : বিটিএ, ঢাকা ড্রামা, ড্রামা সার্কেল, থিয়েটার থিয়েটার, ক্রিস্টি, বাংলা থিয়েটার নিউইয়র্ক, শিল্পাঙ্গন, থিয়েটার ৭১, এপিক অ্যাক্টরস ওয়ার্কশপ, ব্ল্যাক ফিল্ম এবং নাগরিক নাট্যাঙ্গন অ্যানসাম্বল। এ সময় তাহমিনা মোস্তফা, কান্তা আলমগীর, সিফাতউদ্দিন সমবেত কন্ঠে সঙ্গিত পরিবেশনের পাশাপাশি সৈয়দ শামসুল হকের কালজয়ী নাটক ‘নূরলদিনের সারাজীবন’ থেকে অভিনয় করেন বসুনিয়া সুমন। শুরুতে গতবছর যেসব নাট্যার,-নির্দেশক, পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা-অভিনেত্রী মারা গেছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে প্রবীন অভিনেত্রী রেখা আহমেদকেও বিশেষ সম্মান জানানো হয়।

এ আয়োজনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং লগো তৈরীর কারিগর মিথুন আহমেদ সবিস্তারে উল্লেখ করেছেন : অভিবাসের নাটক’ প্রসঙ্গে বলবার আগে উৎসব লোগোটি নিয়ে নাট্য সতীর্থরা কিছু শুনবার কৌতূহল প্রকাশ করেছেন শুরুতেই। কারই বা জানা না আছে যে থিয়েটারকে বোঝাতে বিশ্বজনীন যে সকল সিম্বলিক এক্সপ্রেশনগুলোকে নির্দেশ দেয় তাতে চোখ ও নেত্রের মুদ্রা এবং মুখাবয়বের অভিব্যক্তিগুলোকেই সব সময় প্রাধান্য জ্ঞান করা হয়। এই লোগোটির নকশা তৈরি করবার ক্ষেত্রে, আমি সেই শাশ্বত রেওয়াজটাকেই অনুসরণ করেছি মাত্র। তবে একই সাথে এও খেয়াল রেখেছি যে, কতটা ছকমুক্ত করে লোগোটিকে আঁকা যায়। তবে শুরু থেকেই মাথায় ছিল রেখাচিত্রের সরলীকরনকৃত জ্যামিতিক জ্যা-মুক্ত রূপগুলোর কথা। যতটুকু সরল এবং নিরাভরণ রাখা যায় তাও খেয়াল রেখেছি বারবার। বাংলার পটচিত্র আর হাজার বছরের ঐতিহ্যেমন্ডিত পটুয়াদের হাতে আঁকা সড়াচিত্রের মটিভ, বাংলার প্রাচীন যে জনপদ বঙ্গ আর রাঢ়, সেই কিশোরগঞ্জ কিংবা বিষ্ণুপুরের কুম্ভকারদের হাতে তৈরি টেপা পুতুলের গঠন কাঠামো এই লগো নকশা কে প্রভাবিত করেছে। প্রতীচ্য কে প্রাচ্যের সুঁতোয় গেড়োবন্দি করা যায় কিনা সে কথাও মনে এসেছে বারংবার। আর মাঝখানের চৌকন জমিন টুকুুতে এঁকেছি ইচ্ছে ঘুড়ির নীল রঙে রাঙিয়ে । নীলের স্বপক্ষে আমার যুক্তি পৃথিবীময় অসীম অবারিত নীলিমা। স্বপ্ন বাস্তবতা আর রাশি রাশি প্রত্যাশা।

নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসবের লগো উম্মোচনী পর্বে শীর্ষ ৩ কর্মকর্তা। ছবি-এনওয়াইভয়েস২৪।

এবার আসা যাক এই উৎসবের শিরোনাম ‘অভিবাসের নাটক’ নির্বাচনের নেপথ্যে যে ছায়া-ভাবনাটি কাজ করেছে তা হচ্ছে–বাংলা নাটকের এক নতুন পরিভাষিক অভিজ্ঞানের দিকে অগ্রসর হওয়া। বাংলা নাটকের গঠনগত ও প্রয়োগগত প্রয়াসের মাধ্যমে একটি মানগত ধারনায় ‘বাংলা ডায়াস্পরা থিয়েটার’ একদিন নিশ্চিতভাবে সেই সকল উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের বিদ্যমান উপস্থিতিকে নজরে আনতে পারবে এই আকাঙ্ক্ষা থেকে। তাই এই আকাঙ্ক্ষা ও উদ্দীপনার পাখায় ভর দিয়ে নীল নীল সবুজের ছোঁয়ায় ফিকে গাঢ় হরেক রকম ভাবনায় শূন্যের মাঝেই গাঙচিলদের মতোই আনমনেই সামিল হবার প্রত্যাশায়–এই উৎসের সন্ধান। আমরা একটু একটু করেই এগোতে থাকবো সেই স্বরূপ অন্বেষণের দিকে। এগিয়ে যাবো সেই ডায়াস্পরা থিয়েটারের দিকে, হয়তোবা যার প্রারম্ভিক সূচনা হয়েছিল অনেক আগ থেকেই । আপাতত যতটুকু জানা সম্ভব হয়েছে তা হচ্ছে– বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অভিবাসীদের বাংলা নাট্যচর্চার শুরুটা হয়েছিল আনুমানিক প্রায় চার দশক আগে। হয়তো তারও আগে। ইতিহাসেরও আগে। আরো আগে অভিবাসী বাঙালি সংস্কৃতির যে ইতিহাস আছে–হয়তো সেই ইতিহাস, ঐ ইন্দ্রপুরীর- ইন্দ্রপ্রস্থ থেকে, হিমালয় থেকে বেরিয়ে আসবে একদিন…
অভিবাসী কারা ? অভিবাসী সংস্কৃতিটা কী ? অভিবাসের নাটকের স্বরূপটাই বা কী হবে ? এ নিয়ে আগামী সময়গুলোতেও চলতে থাকবে ব্যাপক আলোচনা বিতন্ডা আর যুক্তির খন্ডন।
হঠাৎ হঠাৎ অভিবাস শব্দটি মনে এলে আচমকা অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত ছাড়া আর কারো লাইন আসে না মনে —
যেখানে যাচ্ছি সেখানে আছে কী ?
সব আছে । অনেক আছে , অঢেল আছে —
কত আশা কত বাসা কত হাসি কত গান
কত জন কত জায়গা কত জেল্লা কত জমক ,
সেখানকার নদী কি এমনি মধুমতী ?
মাটি কি এমনি মমতামাখানো ?
ধান কি এমনি বৈকুণ্ঠ বিলাস?
সোনার মত ধান আর রুপোর মত চাল?
বাতাস কি এমনি হিজল ফুলের গন্ধভরা
বুনো -বুনো মৃদু – মৃদু ?

হ্যা আমরা সেই অভিবাসী বাঙালি–যারা সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়ে নতুন এক সাংস্কৃতিক জনভূমি গড়ে তুলছি এই বিভুঁইয়ে। তাদের জন্য এটা এক নতুন স্বদেশ। এখন এটাও আমাদের এক নিজের দেশ, নতুন দেশ। নতুন দেশের নতুন মানুষ। নতুন নাম–অভিবাসী। ভোররাতের স্বপ্নভরা আদুরে ঘুমটুকু নিয়ে পাশে ফিরে তাকালে আমাদের চোখে এখনো ভেসে ওঠে–একটু দূরে ছলছলাৎ পাগলী নদীর ঢেউ, তার উপর চলেছে ভেসে পালতোলা ডিঙি ময়ূরপঙ্খি।
পোস্ট মর্ডানিজম আর্ট রেভ্যুলেশন এবং উত্তর আধুনিকাবাদী শিল্পতত্ত্ব–সাংস্কৃতিক জনসমাজে অনেক নতুন নতুন ধারণার জন্ম দিয়েছে। জাতিসত্তা নির্ভর শিল্পচর্চার এই প্রেক্ষিতটি এখন অভিবাসী কেন্দ্রিক সাংস্কৃতিক চর্চার একটি নবমাত্রিক ধারণা। যা কি না জন্ম দেয় বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিকতার ধারা।

বছর দশক আগে–কানাডার এক নাট্য সম্মেলনের সেমিনারে ‘ডায়াস্পরা থিয়েটার’ সম্পর্কে লিখতে গিয়ে আমার একটি গবেষণা প্রবন্ধে পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর ‘ডায়াস্পরা থিয়েটার’ এর চর্চা ও অনুশীলনের তথ্য উপাত্তকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়েছিলো আমার।এই পর্যবেক্ষণে বেশ কিছু প্রবণতাকে বিশেষভাবে শনাক্ত করবার সুযোগ ঘটেছিল তখন।

নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসবের লগো উম্মোচনী পর্বে সুধীজন। ছবি-এনওয়াইভয়েস২৪।

‘অভিবাসের নাটক’—শিল্পচিন্তার জগতে এ অভিধাটি অতি সাম্প্রতিক নয়। সমসাময়িক সাহিত্য ও শিল্পকলার প্রয়োগ চর্চায় এই লক্ষণগুলোর উল্লেখযোগ্য উপস্থিতিকে আমরা দেখতে পাই। নিজ নিজ জন্মভূমি থেকে দেশান্তর গ্রহণকারীরা ভিন্ন অন্য কোনো রাষ্ট্রসমাজে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকা পৃথিবীর আর অন্য সকল ভাষাভাষী জাতিগোষ্ঠীর মতোই বাঙালি অভিবাসীরা তাদের প্রাত্যহিকতা আর দিনমান জীবন প্রবাহের মধ্য দিয়েই–স্বদেশ বিচ্ছিন্ন এই সকল অভিবাসী শিল্পী-লেখকদের সৃষ্টিশীলতায় শুধু ছায়াই ফেলেনি তাদের নিজ নিজ জাতিসত্তা সংস্কৃতি এবং কৃষ্টিবোধের মৌলিক অনুষঙ্গ হয়ে ধরা দিচ্ছে। যা কিনা শিল্প সাহিত্যের শৈলীতে নতুন এক সাংস্কৃতিক কাঠামোকে তৈরি করে দিচ্ছে ।

ডায়াস্পরারা মূলত জন্মভূমির বাইরে থেকেও এক স্বদেশী সাংস্কৃতিক চর্চাকে নতুন এক বাঁকে নিয়ে যায়। সেখানে যুক্ত হয় বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিকতা, ফিউশনিজম, একাধিকরণ, একাঙ্গীকরণ আর শিল্পের আত্তীকরণের প্রক্রিয়া। আগামীতে আমাদের পর্যবেক্ষণে হয়তো আরও বেশি করে ধরা দেবে দিবে, — এই সকল আঙ্গিকের বাহ্যিক এবং আত্মিক রূপটি। আমাদের স্মৃতির নস্টালজিয়ায় ছায়াঢাকা ডোবার ধারে হিজল গাছের বুনো বুনো গন্ধ নাকে নিয়ে হাডসন ভেনিস টেম্পসের ধারে বসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে হয়তো নদীকে প্রশ্ন করবো–আমরা কি তোমার গত জন্মের বন্ধু?

একদিন নিশ্চিত জানি, অভিবাসী সংস্কৃতি নিয়ে আমরা একটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাখ্যা এবং এর একটি একাডেমিক সংজ্ঞাতে পৌঁছতে পারবো। আপাতত আবারো না হয় ফিরে আসি আমাদের নাটক নাট্যোৎসবের শিরোনাম ‘ অভিবাসের নাটক ‘ এই নামকরণ বিষয়ে –বাংলাদেশের বাইরে যে সকল দেশে বাংলা নাটকের চর্চা করা হয় এবং বাংলাদেশের বাইরে যারা নাটকের সাথে যুক্ত অভিবাসের নাটকের এই উৎসব সম্মিলনীতে তারা সকলেই একিভূত। বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য নাটক কিংবা বাঙালিদের প্রযোজিত মঞ্চনাট্য চর্চা। আপাতত ‘অভিবাসের নাটক’ নাট্য উৎসব তারাই শামিল হয়েছে এখানে। আমাদের এই উৎসব আন্তর্জাতিক মন্ডলের যতটুকু সম্ভব প্রায় সকল অভিবাসী নাট্যকর্মী এবং তাদের নাট্যকর্মকে যুথিবদ্ধ করবার আগ্রহী। তাই এই উৎসব বাঙালি জাতিসত্তার ক্রমবিকাশমান উন্মেষ ও সাংস্কৃতিক সম্পৃক্ততার বিশ্বজনীন পরিমন্ডলের একটি রুপরেখাকে জানান দেয়া। অভিবাসের নাটক শিরোনামে এই উৎসবকে বাঙালির অগ্রসমান অভিযাত্রাকেই সাক্ষ্য দেবে একদিন। সেই ঐক্যবোধ চেতনা আর সংস্কৃতিক অঙ্গীকারকে ধারণ করে আমরা তাই নাটক নিয়ে সামিল হয়েছি দেশে দেশে বন্দরে শত মরু কন্দরে গৌরী শিখায়। ধন্যবাদ সকলকে । বাংলা নাটকের পরিসর সারা বিশ্বে ব্যাপৃত হোক। উৎসবে আনন্দে প্রতিবাদে হোক বাংলা নাটক। জয় হোক মানুষের। জয় হোক নাটকের। জয় হোক বাংলার। জয় বাংলা বাংলার জয়।

Facebook Comments Box

Posted ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫

nyvoice24 |

Address
New York
Phone: 929-799-2884
Email: nyvoice24@gmail.com
Follow Us