
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট
শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট : ১:২২ অপরাহ্ণ
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশ অনুযায়ী চলমান অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতার অভিযানের সময় বৈধরাও গ্রেফতার প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারলাইন লেভিট স্পষ্ট করেই বলেছেন যে, আইস (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এ্যানফোর্সমেন্ট) এজেন্টসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর চলমান যৌথ অভিযানের সময় পরিচয় পত্র দেখাতে ব্যর্থরাও গ্রেফতার হচ্ছেন। তাই সকলে যেন নিজ নিজ পরিচয় পত্র সাথে রাখেন। প্রেস সেক্রেটারি আরো বলেছেন, মেক্সিকো হয়ে বেআইনী পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারিরা হচ্ছে প্রধান টার্গেট। কারণ, তাদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর অপরাধী রয়েছে এবং তারাই আমেরিকার সমাজ-ব্যবস্থার জন্যে হুমকি। ট্রাম্পের নির্দেশে তাদেরকে গ্রেফতার ও বহিষ্কারের অভিযানে বিচলিত হবার কিছু নেই। উল্লেখ্য, এই অভিযানে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে বসবাসরত এক বাংলাদেশীও গ্রেফতার হয়েছেন যিনি দালালকে ২৫ লাখ টাকা দিয়ে বিভিন্ন দেশ ঘুরে মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করেছিলেন। এবং রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার ডক্যুমেন্টও রয়েছে। সিলেটের বিয়ানিবাজার সদরের বাসিন্দা সাব্বির আহমেদ ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি ঢুকেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। আইসের এজেন্টরা সাব্বিরকে পেনসিলভেনিয়ায় ডিটেনশন সেন্টারে রেখেছে আরো কয়েক বাংলাদেশীর সাথে। এদিকে, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সিটিতে হানা দিয়ে ১০১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। একইদিন চোরাই পথে সীমান্ত অতিক্রমের সময় আটক হয়েছে আরো ৮১৪ জন। উল্লেখ্য, বস্টন, ওহাইয়ো, নিউজার্সি, মিশিগান থেকেও বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে যারা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন কিংবা অন্য কোন প্রোগ্রামে অভিবাসনের মর্যাদা পাবার প্রক্রিয়ায় আছেন।
অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতারের অভিযানে জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছে অনেক সিটির বাণিজ্যিক পাড়া। কমেছে রেস্টুরেন্টর ব্যবসাও। নিউইয়র্ক সিটির পাতাল ট্রেনেও ভীড় হ্রাস পাচ্ছে বলে নিয়মিত যাত্রীরা উল্লেখ করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমস এবং ইপসোস জরিপে ট্রাম্পের এই মনোভাবের প্রতি ৫৫% আমেরিকানের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পাওয়া গেলেও ৮৮% বলেছেন যে, গ্রেফতার আর বহিষ্কার অভিযানে মূল সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে না। এজন্যে প্রয়োজন অভিবাসনের ভঙ্গুর অবস্থাকে ঢেলে সাজানো। এদিকে, বিশ্বখ্যাত নিউজউইকে শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে গণবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার জন্যে কংগ্রেসে অবিলম্বে অভিসংশনের বিল পাশের গণ-দরখাস্তে বৃহস্প্রতিবার পর্যন্ত এক লাখ আমেরিকান স্বাক্ষর করেছেন। অর্থাৎ ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের দিন থেকে যেসব আদেশ জারি করেছেন তাতে ক্রমান্বয়ে শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানরাও বিতশ্রদ্ধ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। স্মরণ করা যেতে পারে প্রথম মেয়াদে অন্তত: দু’বার ট্রাম্পকে অভিসংশনের বিল পাশ হয়েছিল প্রতিনিধি পরিষদে। রিপাবলিকান শাসিত ইউএস সিনেটে সে বিল অনুমোদন পায়নি।
গত ১০ দিনে গ্রেফতার হওয়া অবৈধদের প্রায় সকলকেই বিশেষ বিমানে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার কথা জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট। তারা জানায়, আমেরিকার জনজীবনকে নিরাপদ রাখতে এ অভিযানের বিকল্প ছিল না। সীমান্তকে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার আওতার আনার পাশাপাশি ইতিপূর্বে বেআইনী পথে ঢুকে পড়াদেরকেও তাড়াতে হবে। তাহলে নতুন করে কেউ যুক্তরাষ্ট্রে আসার কথা ভাববে না।
Posted ১:২২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
nyvoice24 | New York Voice 24