
বিশেষ সংবাদদাতা
প্রিন্ট
সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট : ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ
অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতারের সাড়াশি অভিযানের মধ্যেই আরো ৬ লাখের অধিক ভেনেজুয়েলার অভিবাসীকে অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হলো। এরা ভেনেজুয়েলার স্বৈরশাসক মাদুলোর অত্যাচার-নির্যাতন থেকে বাঁচতে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিল এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন তাদেরকে আরো ১৮ মাস সাময়িকভাবে বসবাসের অনুমতি (টিপিএস) দিয়েছিলেন হোয়াইট হাউজ ত্যাগের প্রাক্কালে, যার মেয়াদ শেষ হবার কথা ছিল আগামী বছর সেপ্টেম্বরে। অবৈধ অভিবাসন দ্রুত হ্রাসের জন্যে ট্রাম্পের পরবর্তী টার্গেট হচ্ছে সুদান, এলসালভেদর এবং হাইতির লোকজন। আর এভাবে গোটা আমেরিকায় অস্বস্তি এবং ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এহেন অবস্থার অবসানে ২ ফেব্রুয়ারি রোববার লসএঞ্জেলেস, ডালাস, জর্জিয়া, আরকানসাস, মিজৌরি, ফ্লোরিডা, নিউইয়র্ক সিটিতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। ‘অভিবাসীদের রক্ত পানি করা শ্রমে গড়ে উঠা আমেরিকায় অভিবাসন-বিরোধী তৎপরতা চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রাজপথ। অভিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে লড়াইরত সংস্থাগুলো এই কর্মসূচির ডাক দেয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শেষে সকলেই নিজ নিজ সিটি প্রশাসনের অফিসের সামনে জড়ো হয়ে চলমান গ্রেফতার অভিযানকে ‘অপশাসনের নামান্তর’ অভিহিত করে অবিলম্বে তা বন্ধের দাবি জানানো হয়। জানা গেছে, ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ হাজারের অধিক অবৈধকে গ্রেফতার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বেআইনীভাবে সীমান্ত অতিক্রমের সময় আরো ৬ সহস্রাধিক বিদেশীকে আটক করে ডিটেনশন সেন্টারে নেয়া হয়েছে। নির্বাচনী অঙ্গিকার অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক কোটি ১৭ লাখ অবৈধকে গ্রেফতারের এই অভিযানে আইস (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) এর সাথে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পুলিশকেও দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অভিযান থেকে বাদ যাচ্ছে না স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ-মন্দির-চার্চ-সিনেগগ এবং আদালত পাড়াও। গ্রেফতার অভিযান পরিচালনার সময় আইডি প্রদর্শনে সক্ষম না হওয়ায় বেশ কয়েক ডজন বৈধ অভিবাসীকেও আটকের ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখ্য, নিবাচনী প্রচারের সময় ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে, কেবলমাত্র গুরুতর অপরাধীদেরকেই গ্রেফতার ও বহিষ্কার করা হবে। বাস্তবে তা নেই। আইডি দেখাতে না পারলেই গ্রেফতার করা হচ্ছে।
বিক্ষোভকারীরা অবশ্য এখোন পর্যন্ত সিনেট অথবা হাউজের পক্ষ থেকে কোন সাপোর্ট পাননি। অধিকন্তু ডেমক্র্যাটরাও নিরবতা পালন করছেন ট্রাম্পের এই অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে।
লসএঞ্জেলেস, মিশিগানের ডেট্রয়েট, পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়া, নিউইয়র্কের কুইন্স, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কস, বাফেলো, নিউজার্সির প্যাটারসন, বস্টনের ক্যাম্ব্রিজ, টেক্সাসের হিউস্টন ও ডালাস, জর্জিয়ার আটলান্টাসহ বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটা পড়েছে। জন চলাচল কমেছে। বিশেষ করে গ্রোসারি ও রেস্টুরেন্টে বেচা-কেনা নেই বললেই চলে।
এদিকে, যুদ্ধ-বিদ্রোহ অথবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মানুষেরা নিরাপদ আশ্রয়ে সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রে এলে তাদেরকে সাময়িক বসবাসের অনুমতি দেয়া হয়। কংগ্রেসে পাশ হওয়া একটি বিল অনুযায়ী এই প্রোগ্রাম হচ্ছে টিপিএস (টেম্পরারি প্রটেকশন সিস্টেম)। ভেনেজুয়েলার লোকজনের জন্যে বাইডেন প্রশাসনের ইস্যুকৃত টিপিএস প্রোগ্রাম বাতিল করেছেন ট্রাম্পের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী ক্রিস্টি নয়েম।
Posted ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
nyvoice24 | New York Voice 24