নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট
বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট : ৯:১০ পূর্বাহ্ণ
নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে ‘তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ উপলক্ষ্যে ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা : প্রেক্ষিত বদলে যাওয়া বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সহযোগিতায় ছিল সোনালী এক্সচেঞ্জ কোম্পানী ইনক। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী। সুধীজনের মধ্যে ছিলেন সরকারি/বেসরকারি এক্সচেঞ্জ হ্উাসের প্রতিনিধিবৃন্দ, দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক, সংস্কৃতি ও মিডিয়া অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ। শুরুতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ও সম্ভাব্য বিনিয়োগ বান্ধব সংস্কারের উপর একটি ওয়েবিনারের ভিডিও প্রদর্শন করা হয় যেখানে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বক্তব্য প্রদান করেন।
প্রধান অতিথি মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণে সকলকে নিয়ে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগে নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে ঘোষিত বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে তিনি প্রবাসীদের বাংলাদেশে বেশী বেশী করে বিনিয়োগের আহবান জানান। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রেমিট্যান্সের গুরুত্ব বর্ণনা করে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করার ব্যাপারে একচেঞ্জ হাউসগুলোকে পদক্ষেপ গ্রহনের আহবান জানান। বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় সবদেশের ন্যায় বাংলাদেশও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যেসকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে তা তুলে ধরেন। পরে তিনি সভায় উপস্থিত সুধীজনের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচীর বিষয়ে আলোকপাত করে তিনি সহজতর এবং বিনিয়োগ-বান্ধব প্রক্রিয়া চালু করার বিষয়ে সবাইকে আশস্ত করেন।

নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে ‘তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ -এ বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ। ছবি-এনওয়াইভয়েস২৪।
এ সময় প্রদত্ত বক্তব্যে প্রবাসের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য গিয়াস আহমেদ বলেন, বিনিয়োগে আগ্রহী প্রবাসীদের উৎসাহিত করার স্বার্থে নিউইয়র্ক কন্স্যুলেটে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করা দরকার-যিনি এখান থেকেই অনলাইনে বিনিয়োগের সমস্ত কার্যাদি সম্পন্নে সহযোগিতা দিতে পারবেন। অন্যথায় প্রবাসীদের বিনিয়োগ-ভাবনা বাস্তবায়িত হবে না। কারণ, বাংলাদেশে এখনো প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি বিরাজ করছে। প্রভাবশালীদের ইঙ্গিত অথবা ঘুষ ব্যতিত প্রত্যাশিত সেক্টরে বিনিয়োগের আগ্রহ বরাবরের মতই মুখ থুবড়ে থাকবে। তাই, সময় যেহেতু বদলেছে, সবকিছু অনলাইনে করার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে নিউইয়র্ক সোনালী এক্সচেঞ্জ থেকে ব্যাংক একাউন্ট খোলার বহু পুরনো প্রত্যাশারও বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। গিয়াস আহমেদ আরো বলেন, বিশ্বে দুই কোটির মত প্রবাসী রয়েছি। অনেকের অভিজ্ঞতা রয়েছে উন্নয়ন-পরিক্রমায়। সে সব প্রবাসীকে বাংলাদেশের সংস্কার অভিযানে আমন্ত্রণ জানানো উচিত ছিল। তবে সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি। আশা করছি প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূস নিজে উদ্যোগ নিয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানাবেন।
সোনালী এক্সচেঞ্জের সিইও মহসিন কবির তাঁর বক্তব্যে প্রচলিত বিনিয়োগের পাশাপাশি স্টক ও বন্ডে বিনিয়োগের সুবিধাসমূহের উপর প্রবাসীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে সরকারী প্রণোদনার সুবিধা গ্রহনপূর্বক তিনি সকলকে বৈধপথে রেমিট্যান্স প্রেরণের আহবান জানান।

নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে ‘তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ -এ সুধীজন। ছবি-এনওয়াইভয়েস২৪।
কনসাল জেনারেল মোঃ নাজমুল হুদা তাঁর স্বাগতিক বক্তব্যে বাংলাদেশকে ব্যবসা-বিনিয়োগের এক অপার সম্ভাবনার দেশ হিসেবে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের ক্রম-বর্ধমান অর্থনীতি, দ্রুত বিকাশমান শিল্প ও সেবাখাত, তরুণ জনগোষ্ঠী, পরিশ্রমী এবং মেধাবী শ্রমের সহজলভ্যতা, দ্র্রুত-প্রসারমান প্রযুক্তি-সামর্থ্যসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো উল্লেখ করে তিনি সবাইকে বাংলাদেশের আকর্ষণীয় বিনিয়োগ সুবিধাসমূহ গ্রহন করার আহবান জানান। অধিকতর ক্রয়-ক্ষমতাসম্পন্ন একটি উদীয়মান মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশকে তিনি একটি বড় সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবেও চিত্রিত করেন। ২০২৪ পরবর্তী বদলে যাওয়া বাংলাদেশ সংস্কার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী অর্থনীতির গণতান্ত্রিক দেশে রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় সক্রিয় রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গভায় অংশগ্রহনকারী সকলে অনুষ্ঠানটি আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ কনস্যুলেট ও সোনালী এক্সচেঞ্জকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সভায় আগত অতিথিদেরকে বিভিন্ন প্রকার ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবার আপ্যায়নের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
Posted ৯:১০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
nyvoice24 | New York Voice 24