কানাডার ক্ষমতাসীন পার্টির নেতা হয়েই মার্ক কার্নি বললেন

আমেরিকা আমাদের শ্রদ্ধা না দেখানো পর্যন্ত আমাদের আরোপ করা শুল্ক বজায় রাখবো

বিশেষ সংবাদদাতা   প্রিন্ট
সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫   সর্বশেষ আপডেট : ১:১৮ অপরাহ্ণ

আমেরিকা আমাদের শ্রদ্ধা না দেখানো পর্যন্ত আমাদের আরোপ করা শুল্ক বজায় রাখবো

এক লাখ ৫২ হাজার ভোটারের মধ্যে ৮৫.৯% এর ভোটে কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির সম্মেলনে দলটির নতুন নেতা নির্বাচিত হয়েছেন মার্ক কার্নি। অর্থাৎ পদত্যাগকারী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। রোববার প্রকাশিত আনুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা গেছে, লিবারেল পার্টির নেতা নির্বাচনের ভোটাভুটিতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর কার্নি সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন। কার্নি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও সাবেক গভর্নর।
এক টালমাটাল সময়ে কানাডা যখন নানা সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তখন কার্নি দেশটির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে থাকা দীর্ঘ দিনের মিত্র, প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে আছে কানাডা। তারপর কার্নিকে দ্রুতই একটি সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। লিবারেল পার্টির ওই ভোটাভুটিতে কার্নি (৫৯) কানাডার সাবেক অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে পরাজিত করেন। নির্বাচিত হয়েই আমেরিকা প্রসঙ্গে কার্নি বলেন, “নতুন এলে তো নতুন ধরনের ভাবনা এবং পরিকল্পনা দরকার হয়। আমরা আরও নির্ভরযোগ্য দেশের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করবো।” আমেরিকা তাদের পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে কানাডাও পাল্টা চাপাবে, সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কার্নি। তিনি বলেন, “আমেরিকানরা যতদিন না আমাদের শ্রদ্ধা জানাবে ততদিন পারস্পরিক শুল্ক থাকবে।”

রাজনীতিতে বহিরাগত কার্নিই হচ্ছেন কানাডার এ জগতের অভিজ্ঞতাহীন প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তবে তিনি জানিয়েছেন, দুটি জি৭ রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্বপালনের অভিজ্ঞতা থাকা প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তিনিই ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি।

ট্রুডো নয় বছরেরও বেশি সময় ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। কিন্তু জনসমর্থন হ্রাস পাওয়ায় জানুয়ারিতে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ফলে লিবারেল পার্টিকে দ্রুত নতুন নেতা নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হয়েছে।

সম্মেলনের প্রাক্কালে বিদায়ি প্রধানমন্ত্রী ও লিবারেল পার্টির নেতা ট্রুডো বলেন, “কোনো ভুল করবেন না, এটি একটি জাতি-নির্ধারক মুহূর্ত। গণতন্ত্র প্রদত্ত কিছু নয়। স্বাধীনতাও প্রদত্ত কিছু না। এমনকি কানাডাও প্রদত্ত কিছু না।”

কার্নি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর থাকার পর ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ডের প্রথম অ-ব্রিটিশ গভর্নর হিসাবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই অভিজ্ঞতা থাকার কারণে যে কোনও অর্থনৈতিক সঙ্কট তিনি সহজে মোকাবেলা করা এবং ট্রাম্পকেও তিনি ভালভাবে সামাল দিতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে রাজনীতিতে তার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। এ জগতে নতুন তিনি। যাকে তার দুর্বলতার দিক বলে বিবেচনা করা যেতে পারে।

ট্রাম্প কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এই হুমকি বাস্তবায়িত হলে কানাডার রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতি ঝুঁকির মুখে পড়বে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ট্রুডো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা ৩০ হাজার কোটি কানাডিয়ান ডলারের পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। কার্নি বলেছেন, “আমেরিকা আমাদের শ্রদ্ধা না দেখানো পর্যন্ত আমার সরকার আমাদের আরোপ করা শুল্ক বজায় রাখবে।”

Facebook Comments Box

Posted ১:১৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

nyvoice24 |

Address
New York
Phone: 929-799-2884
Email: nyvoice24@gmail.com
Follow Us