ফোনে হিজবুল্লাহ নেতার ছবি: ভিসা থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেয়নি রাশা আলাওহেইকে

বিশেষ সংবাদদাতা   প্রিন্ট
মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫   সর্বশেষ আপডেট : ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ

ফোনে হিজবুল্লাহ নেতার ছবি: ভিসা থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেয়নি রাশা আলাওহেইকে

ছবি সংগৃহীত

ভিসা থাকা সত্বেও গত শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করেছে রোড আইল্যান্ডে অবস্থিত ব্রাউন ইউনিভার্সিটির কিডনি প্রতিস্থাপন বিষয়ের এক্সপার্ট চিকিৎসক-শিক্ষক রাশা আলাওহেইকে (৩৪)। সহকারি ইউএস এটর্নী মাইকেল স্যাডি সোমবার বস্টনের এক ফেডারেল আদালতকে লেবানিজ রাশাকে বহিষ্কারের কারণ হিসেবে জানিয়েছেন যে, হিজবুল্লাহ গ্রুপের নেতা হাসান নাসারাল্লাহ’র ছবি পাওয়া যায় তার সেলফোনে। হিজবুল্লাহ গ্রুপকে দুই দশক আগে যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ করেছে ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠন হিসেবে। উল্লেখ্য, গত বৃহস্প্রতিবার নিজ দেশ থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় বস্টন এয়ারপোর্টে রাশাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কাস্টমস অ্যান্ড বোর্ডার প্রটেকশন (সিবিপি) এজেন্টরা তার সেলফোনে হাসান নাসারুল্লাহ্্র ভিডিও-বক্তব্য ও ছবি দেখার পরই তাকে আটক করে। আটকের এ সংবাদে তার সহকর্মীরা ফেডারেল কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী মাননীয় আদালত তার বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করে এবং কেন অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সিবিপি আদালত থেকে অফিসিয়ালী জানতে না পেরে শুক্রবার তাকে প্যারিসমুখী একটি ফ্লাইটে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সোমবার এটর্নী মাইকেল স্যাডি আদালতকে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, লেবাননের ঐ সংগঠনের শীর্ষনেতা নাসারাল্লাহ্্ও ছবি রাশা ডিলিট করলেও তা রয়ে যায় ফোনে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় চিকিৎসক রাশা সিবিপি কর্মকর্তাকে জানান যে, গতমাসে নাসারাল্লাহ্্ও জানাযায় অংশ নিতে তিনি লেবাননে গিয়েছিলেন। নাসারাল্লাহকে তিনি শ্রদ্ধা করেন ধর্মীয় নেতা হিসেবে, রাজনৈতিক কারণে নয়।

জানা গেছে, বিশেষভাবে দক্ষ চিকিৎসক হিসেবে ভিসাধারী ছিলেন রাশা। এমনি অবস্থায় কেন তাকে এয়ারপোর্টে আটক করা হয়েছে তা জানতে চেয়েছিলেন ফেডারেল আদালতের বিচারক লিও সরোকিন। শুধু তাই নয়, ভিসাধারীকে গ্রেফতারের আগে কেন আদালতের অনুমতি নেয়া হয়নি তাও জানতে চেয়েছিলেন এবং মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রাশাকে বহিষ্কারের পদক্ষেপ স্থগিতের আদেশ দিয়েছিলেন। সোমবার ছিল শুনানীর তারিখ। সে সময় সরকারকে আরো এক সপ্তাহের সময় দেয়া হয়েছে রাশার ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে। এমনি অবস্থায় বস্টনের লগোন এয়ারপোর্টে সিবিপি কর্মকর্তা জন ওয়ালেস মাননীয় আদালতকে অবহিত করেন যে, রাশাকে বহিষ্কারের স্থগিতাদেশের অফিসিয়াল নির্দেশ তারা পাননি শুক্রবার রাতে এয়ার ফ্যাঞ্চের ফ্লাইটটি প্যারিসের উদ্দেশ্যে উড্ডয়নের আগ পর্যন্ত। জানা গেছে, ২০১৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন রাশা। তিনি ওহাইয়ো ইউনিভার্সিটিতে নেফরোলজি ফেলোশিপ পেয়েছিলেন। এরপর তিনি একইধরনের আরেকটি প্রোগামে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনেও লেখাপড়া করেছেন। এছাড়া বিশ্বখ্যাত ইয়েল ইউনিভার্সিটিতেও ইন্টারনাল মেডিসিনে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে বিশেষ দক্ষ কর্মীর ভিসায় ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার নির্বাচনী অঙ্গিকার অনুযায়ী গুরুতর অপরাধে লিপ্ত অবৈধ অভিবাসীদেরকে বহিষ্কারের আদেশ জারি করলেও ইতিমধ্যেই অনেক গ্রীণকার্ডধারী অথবা ইউএস সিটিজেনের স্বামী/স্ত্রীকেও গ্রেফতারের পর বহিষ্কার করা হয়েছে। এরমধ্যে জার্মানের ট্যুরিস্ট, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতার ঘটনা সারা আমেরিকায় তোলপাড় করছে। ভেনেজুয়েলার ট্রেন দ্য আরগুয়া গ্রুপের সদস্যদেরকেও গ্রেফতারের পর বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে আদালতের স্থগিতাদেশ নিষেধ সত্বেও। এরফলে বিচার বিভাগেও সাথেও ট্রাম্প প্রশাসনের এক ধরনের যুদ্ধ শুরুর মত পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Facebook Comments Box

Posted ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

nyvoice24 |

Address
New York
Phone: 929-799-2884
Email: nyvoice24@gmail.com
Follow Us