ফুুল ফুটুক আর না ফুটুক-এখন বসন্ত : ব্যাংকার আকিব বললেন

সুদের হার না কমলেও বাড়ি ক্রয়ে এখোনই উত্তম সময়

বিশেষ সংবাদদাতা   প্রিন্ট
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫   সর্বশেষ আপডেট : ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ

সুদের হার না কমলেও বাড়ি ক্রয়ে এখোনই উত্তম সময়

ফুল ফুটুক আর না ফুটুক-বসন্ত শুরু হয়েছে ২০ মার্চ। আর এটি হচ্ছে বাড়ি ক্রয়ের উপযুক্ত সময়। শীতের জবুথবু অবস্থান থেকে পরিত্রাণের পথ বেয়ে শরীরটাকে এক ঝটকায় স্বাভাবিকের পর্যায়ে এনেই ছুটছেন প্রবাসীরা স্বপ্নের বাড়ির সন্ধানে। রিয়েল এস্টেট ব্রোকার এবং মর্টগেজ লোন অরিজিনেটররাও নড়ে চড়ে বসেছেন। কারণ, গ্রীষ্মের খরতাপের চেয়ে বসন্তই উত্তম সময় প্রথম বারের বাড়ী ক্রেতাদের কাছে। যুগের পর যুগ এমন বার্তাই বয়ে এনেছে আমেরিকার জনপদে। নিউইয়র্কের প্রবাসীরাও একই বার্তা বহন করছেন বলে জানালেন কম্যুনিটির প্রিয়মুখ, সদালাপি এবং বাড়ির ক্রেতার কাছে প্রথম পছন্দের মর্টগেজ-মঞ্জুরকারি ‘মেডোব্রুক’র ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আকিব হোসাইন। বুধবার ফেডারেল রিজার্ভের নিয়মিত ত্রৈ-মাসিক বৈঠকেও সুদের হার কমানো হয়নি। এমনকি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিকট প্রতিবেশীদের সাথে বাণিজ্যিক যুদ্ধের খেসারত হিসেবে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের নাম-নিশানাও পাওয়া যাচ্ছে না। টালমাটাল অবস্থা স্টক মার্কেটেও। তবুও কেন এটাই উত্তম সময় বাড়ি ক্রয়ের? জবাবে ১৯ মার্চ এ সংবাদদাতাকে আকিব হোসেন বললেন, কারণ, পরিস্থিতি যত টালমাটালই হউক না কেন, বাড়ি ক্রয়ের এটাই ভালো সময়। যত কালক্ষেপন করবেন বাড়ির দাম তত বাড়বে। বেড়েই চলে-এটাই স্বাভাবিক। তাই সুদের হার কমলে বাড়ি ক্রয়ের কথা যারা ভাবছেন তারা মূলত: ক্ষতিগ্রস্তই হবেন। কারণ, ভাড়ার টাকা জলে যাচ্ছে। অপরদিকে, বাড়ির দামও বেড়েই চলছে। বহু বছরের গতি-প্রকৃতি আলোকে আমার পরামর্শ হচ্ছে কম্যুনিটির প্রতিষ্ঠিত রিয়েল এস্টেট ব্রোকারের পরামর্শ অনুযায়ী পছন্দের বাড়ি ক্রয়ের সিদ্ধান্তটি চ’ড়ান্ত করুন। আমার অফিসও রয়েছে সব সময় খোলা আপনার মর্টগেজ যতটা সম্ভব সহজ ভাবে মঞ্জুরের জন্যে।

কুইন্স বুলেভার্ডে (১৩৯-২৭, স্যুইট-২, জ্যামাইকা, এনওয়াই১১৪৩৫) অবস্থিত বাড়ি ক্রয়ের জন্যে তুলনামূলকভাবে কম সুদে ঋণ প্রদানকারি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান মেডোব্রুকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আকিব হোসাইন বললেন, তবে বাড়ি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতাকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। ৮ লাখ ডলারের বাড়ি ৫ লাখ ডলারে বিক্রির জন্যেও প্রস্তুত মালিকের সস্তা কথায় ভুলে যাওয়া উচিত হবে না। তাহলে ঠকতে হবে। পস্তাতে হবে বছরের পর বছর। কারণ, বাজার মূল্যের চেয়ে তিন লাখ ডলার কমে বাড়ি বিক্রয়ের জন্যে প্রস্তুত হবার নেপথ্যে নিশ্চয়ই জটিল কোন কারণ থাকে। যার খেসারত দিতে হয় সহজ-সরল ক্রেতাকে। এক্ষেত্রে কোন কোন অসাধু রিয়েল এস্টেট ব্রোকারও নিজের পকেট ভারি করার জন্যে প্রিয়-পরিচিত কম্যুনিটির কঠোর পরিশ্রমী ক্রেতাকে ঠকানোর পথ খুঁজেন। এমন অনেক কাহিনী ভেসে বেড়াচ্ছে পথে-প্রান্তরে। নিরবে কষ্টের বোঝা বইছেন অনেকে। কেউ কেউ আদালতের বারান্দায় প্যারেড করছেন মাসের পর মাস। কারণ, ব্রোকার মিথ্যা কথা বলে, নানা ছলচাতুরিতে ঘরে ভাড়াটে-সহ বাড়ি ক্রয়ে উৎসাহিত করেছেন। ক্রয়ের দলিল সম্পন্ন হবার পর ভাড়া দিচ্ছেন না সেই ভাড়াটে, এমনকি বাড়ি ছেড়েও যাচ্ছেন না। আকিব বললেন, নিউইয়র্ক স্টেট হচ্ছে ভাড়াটের স্বার্থ সুরক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উদার এলাকা। এরফলে নতুন সেই ক্রেতা মাসের পর মাস ভাড়া না পেলেও নির্দিষ্ট সময়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতেই হয়। আকিব বললেন, এমন পরিস্থিতিতে অনেক ল্যান্ডলর্ড কর্র্তৃক ভাড়াটেকে খুনের ঘটনা, এমনকি কোন কোন ল্যান্ডলর্ড নিজ বাড়িতে আগুন ধরিয়ে সেই ভাড়াটে উচ্ছেদের উপায় খুঁজতেও দেখা গেছে। এসব ঘটনা আমাদের চারপাশেই ঘটছে। তাই অসাধু ব্্েরাকারের কথায় ক্লোজিংয়ের আগে বাড়িটি পুরোপুরি খালি আছে কিনা এবং বাড়ির ওপর আর কোন আইনী ঝামেলা অথবা কোন ভায়োলেশন আছে কিনা তা পরখ করা খুবই জরুরী। এছাড়া, ৮ লাখ ডলারের বাড়ি কেন ৫ লাখে বিক্রি করার ঘোষণা এসেছে-সেটিও যাচাই করা দরকার।

মেডোব্রুকের প্রেসিডেন্ট ড্যানি নিকোলোর সাথে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আকিব হোসাইন। ছবি-এনওয়াইভয়েস২৪।

আকিব তার স্বভাবসিদ্ধ ভাষায় উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, অনেকে আছেন বাজারে গিয়ে সস্তায় পচা আম কিনে আনেন। অথচ সেই আমের প্রায় পুরোটাই খাবার অযোগ্য থাকে। অর্থাৎ ‘সস্তার তিন অবস্থা’-এ প্রবাদ বাড়ি ক্রয়ের ক্ষেত্রে আরো বেশী প্রয়োজ্য। এই সময়ে দুনিয়ার কোন মানুষই বোকা নন। ইচ্ছা করলেই ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা সম্ভব। এমনকি আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্টের সহযোগিতাও নেয়া যাচ্ছে। আকিব বলেন, আমরা মনে করি আমিই সবচেয়ে চালাক, অন্যসব বোকা। তাই সস্তায় অ্যকশনের বাড়ি ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ হচ্ছি। বাড়ির ভেতরের অবস্থা দেখার আগ্রহ হারিয়ে পরবর্তীতে ফেসে যাচ্ছি। এমন একটি সিন্ডিকেটের কথা শোনা যায় মাঝেমধ্যেই। ওরা ব্রোকারেজ কমিশনের ১০/১৫ হাজার ডলার পাবার কারণে ক্রেতার স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে থাকেন অথবা জেনেশুনে ক্রেতাকে বিপদে ঠেলে দিচ্ছেন। মনে রাখতে হবে যে, ক্লোজিংয়ের পর আর সেই দালাল চক্রকে খুঁজে পাবেন না। সকল ধকল পোহাতে হয় ক্রেতাকেই অর্থাৎ নতুন ল্যান্ডলর্ডকে।
আকিব বললেন, নিউইয়র্ক অঞ্চলে এখনো অনেক বাড়ি বিক্রি হচ্ছে। প্রবাসীরাও ক্রয় করতে দ্বিধা করছেন না। কারণ, দিন যত যাচ্ছে বাড়ির দামও বাড়ছে। কখনো কোন বাড়ির দাম কমেনি-এটাই প্রকৃত সত্য। কারণ, বিশ্বের যে আকার, তা বাড়বে না, অপরদিকে প্রতিদিনই জনসংখ্যা বাড়ছে। অর্থাৎ বাড়ির চাহিদাও বাড়ছে। সে তুলনায় তৈরী হচ্ছে না। অনেক স্থানে নতুন বাড়ি নির্মাণের জায়গাও নেই। তাই যখোন বাড়ির মালিক হবার কথা ভাববেন তখোনই ক্রয়ে দ্বিধা করবেন না। যত দেরী করবেন তত বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ, ভাড়া গুনতে হচ্ছে উচ্চ হারে। সেটি বিবেচনায় রেখে পদক্ষেপ নিচ্ছেন অনেকে। বাড়িটি ভেতরে-বাইরে এবং আশে-পাশের পরিবেশ সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার পর কম-বেশীর জন্যে সময় ক্ষেপন করা উচিত নয়।
সুদের হার নির্ভর করে সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর। আমেরিকার অর্থনৈতিক অবস্থা যদি ভালো হয় তাহলে সুদের হার কমে। এটাই স্বাভাবিক। প্রতি মাসেই জব রিপোর্ট আসে। মুদ্রাস্ফীতির অবস্থাও জানানো হয়। বিভিন্ন রিপোর্টের ভিত্তিতে তিন মাস অন্তর ফেডের মিটিং হয় এবং সুদের হার নির্দ্ধারণ করা হয়ে থাকে। বুধবারও তেমনি একটি বৈঠকে সুদের হার একই রাখা হয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোমি পাওয়েল সামগ্রিক পরিস্থিতির আলোকে বলেছেন, মুদ্রাস্ফীতি কমেনি। কানাডা, মেক্সিকো, চীনের সাথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাণিজ্যিক যুদ্ধে লিপ্ত হবার কারণে সামগ্রিক পরিস্থিতি টালমাটাল অবস্থায় নিপতিত হয়েছে। স্টক মার্কেট কদিন থেকেই নিন্মমুখী। তাই এখন সুদের হার কমানোর কোন সুযোগ নেই। তবে এবছর আরো দু’দফায় কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আকিব বলেন, পরিকল্পনা অনেক কিছুই থাকে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। তাই যারা বাড়ি কিনতে চান, তারা সময়ক্ষেপণ না করাই উত্তম। আকিব বলেন, গত নির্বাচনে ট্রাম্পকে বিপুল অর্থ দিয়েছে ওয়ালস্ট্রিটের লোকজন, সিলিকন ভ্যালির ধনকুবেররা। তাদের চাঁদার অর্থে ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন। তাহলে ঐসব ব্যবসায়ীর ফায়দা কী-এমন প্রশ্নের জবাব হিসেবে বলা যায়, ট্রাম্প-তো তাদেরকে সরাসরি কোন সুযোগ দিতে পারবেন না। সেটি হবে অন্যায়, এফবিআই, বিচার বিভাগের চোখ-কান খোলা রয়েছে। তাই এমনও হতে পারে চাঁদা প্রদানকারি ঐসব ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে স্টক মার্কেট ডাউন করছে। এখোন ঐসব ধনকুবের-ব্যবসায়িরা বিপুল অংকের পুঁজি বিনিয়োগ করবেন। একবছর দেড় বছর পর এই স্টকের মূল্য ৩/৪ গুণ বাড়বে। তখোন তারা সে সব বিক্রি করবে এবং ট্রাম্পকে প্রদত্ত চাঁদার অনেক বেশী অর্থ আয়ে সক্ষম হবেন। এ ধরনের একটি পলিটিক্সের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকে। এটাকে বলে ‘শ্যেক ডাউন’। নানা রটনায় মার্কেটকে টালমাটাল করে ফাঁয়দা হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে ঐসব চাঁদা প্রদানকারিকে। এটা হচ্ছে পার্ট অব পলিটিক্স।

মেডোব্রুকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আকিব হোসাইনের ইফতার মাহফিলে সুধীজন। ছবি-এনওয়াইভয়েস২৪।

নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে সবচেয়ে বেশী বাড়ি বিক্রি হচ্ছে। এরপর রয়েছে স্ট্যাটেন আইল্যান্ড, ব্রুকলীন, বাফেলো, আলবেনী। আবার কেউ কেউ ছুটছেন নিউজার্সিতে। ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে ব্রোকারের সংখ্যাও বেড়েছে। বেশ কয়েক হাজার ব্রোকার রয়েছেন কম্যুনিটিতে। বাংলাদেশ থেকে আনা ক্যাশ টাকায় বাড়ি ক্রয়ের কৌশল হিসেবে লোন অফিসারের এওয়ার্ডপ্রাপ্ত আকিব বলেন, যেভাবেই আনেন না কেন তা ব্যাংকের একাউন্টে জমা করতে হবে। অনেক বেশী পরিমাণের টাকা একইসাথে একাউন্টে জমা করা সমীচিন নয়। স্বামী-স্ত্রী-সন্তানের (প্রাপ্ত বয়স্ক) নামে পৃথক একাউন্ট থাকা উত্তম। প্রতি মাসেই সবকটি একাউন্টে কিছু কিছু করে জমা করলে দিন শেষে অর্থাৎ বাড়ির ক্লোজিংয়ের সময় তা একত্রিত করা যায়। তাই যারা বাংলাদেশ থেকে আনা টাকায় বাড়ি ক্রয় করতে চান তাদেরকে বিশ্বস্ত কোন মর্টগেজ ব্রোকার অথবা ব্যাংকারের পরামর্শ নেয়া জরুরী। তবে এক্ষেত্রেও মনে রাখতে হবে যে, ঠকবাজের পরামর্শ নিলে আম-ছালা উভয়ই হারানোর আশংকা বাড়বে।

এদিকে, কম্যুনিটির স্বল্প ও মাঝারি আয়ের প্রবাসীদের বাড়ি ক্রয়ের স্বপ্ন পূরণে নিষ্টার সাথে সহযোগিতার পরিপ্রেক্ষিতে ২০ মার্চ আকিব হোসাইনের দেয়া ইফতার-মাহফিলে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বিপুলসংখ্যক রোজাদারের সমাগম ঘটেছিল। এ সময় মেডোব্রুক ফাইন্যান্সিয়াল মর্টগেজ ব্যাংকের মালিক ও প্রেসিডেন্ট ড্যানি নিকোলো-ও ছিলেন আকিবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। মাহফিলের মঞ্চের পাশে এ সংবাদদাতার সাথে সংক্ষিপ্ত এক আলাপচারিতায় ড্যানিয়েল জানান, ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মেডোব্রুক যুক্তরাষ্ট্রের ২৮টি স্টেটে কাজ করছে। ২০১৫ সালে যোগদানের পর থেকেই আকিব হোসাইন বাংলাদেশী আমেরিকানদের মধ্যে এই ব্যাংকের বিশেষ একটি অবস্থান তৈরী করতে সক্ষম হয়েছেন। ড্যানিয়েল জানান যে, বেশ কয়েক ডজন বাংলাদেশী কাজ করছেন এই ব্যাংকে। সকলেই মূলত: নিউইয়র্ক অঞ্চলেই অধিক সার্ভিস দিচ্ছেন। আমি এ ইফতার-মাহফিলের কম্যুনিটির সর্বস্তরের মানুষের বিপুল সমাগম দেখে অভিভ’ত এবং আশা করছি আকিবের কর্মকান্ডে মেডোব্রুক নিকট ভবিষ্যতে আরো সমৃদ্ধি পাবে। মডেল কন্যা মোনালিসার উপস্থাপনায় ইফতার মাহফিলে আকিবের ঋণ বিতরণে সততা-নিষ্ঠার প্রশংসা করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, মূলধারার রাজনীতিক ফাহাদ সোলায়মান প্রমুখ। বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন ভিএনএস হেল্থে’র মার্কেট ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক পরিচালক সালেহ আহমেদ, ফিডেলিস কেয়ারের মোশাইদ হোসেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল খান, সেক্রেটারি রুকন হাকিম. বোর্ড অব ট্রাস্টির মেম্বার বদরুন খান মিতা, ট্র্যাভেল ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সোসাইটির প্রচার সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ, কম্যুনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আব্দুল কাদের চৌধুরী শাহীন প্রমুখ।

মেডোব্রুকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আকিব হোসাইনের ইফতার মাহফিলে সুধীজন। ছবি-এনওয়াইভয়েস২৪।

অপর একটি সূত্রে এ সংবাদদাতা জানতে পেরেছেন, কয়েক বছর আগে থেকে কম্যুনিটিতে একটি সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। ওরা সহজ-সরল প্রবাসীকে ধোকা দিয়ে কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। বাড়ি ক্রয়ে আগ্রহী প্রবাসীর সঞ্চিত অর্থের বিস্তারিত তথ্য জানার পর ঐ প্রবাসীকে লোভ দেখাচ্ছেন ব্যবসায় বিনিয়োগের এবং অ্যকশনে উঠা বাড়ি ক্রয়ের পর তা সামান্য সংস্কার/পুননির্মাণের মাধ্যমে লক্ষাধিক ডলার মুনাফার। হাতে-কলমে হিসাবও দেখানো হচ্ছে। সহজে বছর শেষে লক্ষাধিক ডলার লাভ পাবার টোপে পড়ে শতাধিক প্রবাসী এখোন আদালতে দৌড়াচ্ছেন বলেও জানা গেছে। কারণ, ঐ সিন্ডিকেটকে অর্থ প্রদানের পর আর তা ফেরৎ পাচ্ছেন না, লাভ দূরের কথা। এরও আগে মর্টগেজ ব্যাংকার পরিচয়ের পাশাপাশি সিনেটর-কংগ্রেসম্যান-গভর্ণর-সিটি মেয়রের সাথে ছবি উঠিয়েও অনেক প্রবাসীর সর্বস্ব লুটে নেয়ার ঘটেছে। প্রতারকরা জেল-জরিমানার শিকার হলেও ভিকটিমরা অর্থ ফেরৎ পাননি। পুরনো সেই চক্রটি আবারো নতুন লেবাসে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে বলে শোনা যাচ্ছে। এহেন অবস্থায় সকলকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে অর্থাৎ কম্যুনিটির প্রতিষ্ঠিত এবং বিশ্বস্ত লোকজনের শরনাপন্ন হওয়া জরুরী কষ্টার্জিত অর্থে স্বপ্নের বাড়ি ক্রয়ের পরিকল্পনা গ্রহণের পরই।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে নিউইয়র্ক সিটিতে ১৯৭৭৬২টি বাড়ি বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে মাঝারি এবং নি¤œ আয়ের মানুষেরা ক্রয় করেছেন একেকটি বাড়ি গড়-পরতা ৪৮৩১০৩ ডলারে। একইসময়ে সারা আমেরিকায় বাড়ি বিক্রি হয়েছে ৪৮ লাখের মত। করোনাকালে সবকিছু লকডাউনে যাওয়ায় নির্মাণ সামগ্রি উৎপাদন ও পরিবহনে সংকটের কারণে বাড়ির চাহিদা অনুযায়ী নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এরফলে গড়-পরতা দাম বেড়েছে সর্বত্র। অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, নিউইয়র্ক অঞ্চলে নতুন ক্রেতার মধ্যে হোমকেয়ারের সাথে জড়িত লোকজনই বেশী ছিলেন। সেবা-দাতারাও মোটা অংকের অর্থ উপার্জনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বপ্নের বাড়ি ক্রয়ে দ্বিধা করেননি। করোনাকালিন বেকার ভাতা গ্রহণকারিরাও বাড়ির উচ্চমূল্যের জন্যে অনেকাংশে দায়ী বলে রিয়েল এস্টেট ব্রোকারদের অভিযোগ।

Facebook Comments Box

Posted ৯:০০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

nyvoice24 |

.

Address
New York
Phone: 929-799-2884
Email: nyvoice24@gmail.com
Follow Us