
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট : ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ
ফাইল ছবি
সারাবিশ্বের সাংবাদিক-গণমাধ্যম কর্মীগণের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষায় নিরন্তরভাবে কর্মরত নিউইয়র্কভিত্তিক ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস’ তথা সিপিজের এক সতর্কবানীতে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে আগ্রহী সাংবাদিকগণকে কম্প্যুটার এবং সেলফোন একেবারেই ‘ক্লিন’ করার পরামর্শ দিয়েছে। ১৭ এপ্রিল সিপিজে’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে যে, রাজনৈতিক অথবা কূটনৈতিক ইস্যু নিয়ে কর্মরতরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকালে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে পারেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের সমালোচনামূলক কিংবা ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে তিক্ত সম্পর্কের দেশ/সংস্থাসমূহের পক্ষাবলম্বনকারি মতামত/মন্তব্যসমূহ যেন ল্যাপটপ/মোবাইল থেকে একেবারেই মুছে ফেলা হয়। সম্ভব হলে সেলফোনের সিম-ও পরিবর্তন করা যেতে পারে। সিপিজে আরো উল্লেখ করেছে, ল্যাপটপ কিংবা কম্প্যুটারের ডিভাইসে ডিলিট করার নামে কোনকিছু আড়ালে রাখাও সমীচিন হবে না। তখোন কাস্টমস অ্যান্ড বোর্ডার প্রটেকশন (সিবিপি)কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে আটকের উপাত্ত খুঁজে পেতে পারে। সিপিজে আরো বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, গ্রীণকার্ডধারী অথবা ভিসাধারী-সকলের জন্যেই এমন পরিস্থিতির অবতারণা হতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনের নয়া একটি আদেশ জারির পরই। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে ইতিমধ্যেই ৪০টি দেশের তালিকা তৈরীর তথ্য প্রকাশ/প্রচারিত হয়েছে। ঐসব দেশের পাসপোর্টধারী এবং ঐসব দেশ সফরের পর যুক্তরাষ্ট্রে আসার সময় সীমান্ত/এয়ারপোর্টে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হবে সংবাদকর্মীদেরকেও-এমন আশংকা ব্যক্ত করেছে সিপিজে। দেশসমূহের অন্যতম হচ্ছে ইরান, রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা-সহ আফ্রিকান কয়েকটি দেশ। সিপিজের বুলেটিনে আরো বলা হয়েছে যে, এমন তল্লাশী, জিজ্ঞাসাবাদ এবং হয়রানির পর সীমান্ত থেকেই সংশ্লিষ্ট সংবাদকর্মীকে নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়ার মত পরিস্থিতির ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসন তেমনভাবে প্রচারণা না-ও চালাতে পারে। ইতিমধ্যেই যার আলামত শুরু হয়েছে। তাই কোন ধরনের বিব্রতকর/অস্বস্তিকর অকল্পনীয় পরিস্থিতির ভিকটিম হওয়ার আগেই যেন সাংবাদিকরা তৈরী থাকেন-এমন কথাও বলা হয়েছে। সিপিজে বলেছে, ট্রাম্প প্রশাসন সিবিপি-কে সর্বাত্মক ক্ষমতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কম্প্যুটার, সেলফোন-সহ সকল ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস খতিয়ে দেখার। এক্ষেত্রে আগাম কোন নোটিশ কিংবা আদালতের নির্দেশেরও প্রয়োজন হচ্ছে না।
সিপিজের অন্তর্বর্তীকালিন চিফ ইমার্জেন্সি অফিসার ক্যাটালিনা করটেজ বলেছেন, পেশাগত কারণে ঘনঘন বিভিন্ন দেশ সফরকারি সাংবাদিকগণের মধ্যে সিবিপি কর্তৃক অযথা তল্লাশী/জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা চরমে উঠেছে বলে জানতে পারছি। সে অবস্থায় আমরা যে নির্দেশনা/সতর্ক বাণী উচ্চারণ করছি তা অনেক সাংবাদিকের অযথা হয়রানি/হেনস্থা রোধে সহায়ক হবে বলে আশা করছি। সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির সিনিয়র ফেলো নেগার মোর্টাজাভি গণমাধ্যমে উল্লেখ করেছেন যে, মার্কিন প্রশাসনের আচরণে প্রতিয়মান হচ্ছে যে স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতার পথ কিংবা বাক-ব্যক্তির অবাধ স্বাধীনতা ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হয়ে আসছে। এহেন অগণতান্ত্রিক আচরণ চলতে থাকলে কথা বলার স্বাধীনতা এবং বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে।
সিপিজে আরো পরামর্শ দিয়েছে যে, পেশাগত এবং নিজের অধিকার সুরক্ষায় তাৎক্ষণিক সহায়তা/পরামর্শ পাবার মত ব্যক্তি/সংস্থার ফোন নম্বর এবং অতি প্রয়োজনীয় সোর্সের নাম-ফোন নম্বরও কাগজে লিখে রাখা দরকার। কারণ সিবিপি কম্প্যুটার আটক করতে পারে কিংবা সবকিছু মুছে ফেললে যেন জরুরী প্রয়োজন মেটাতে ঝামেলা পোহাতে না হয়।
সিপিজে অবশ্য উল্লেখ করেছে যে, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা’ প্রযোজ্য থাকাকালিন কোন সাংবাদিক অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধার সম্মুখীন হয়নি। এ মেয়াদেও এখোন পর্যন্ত কাউকে এয়ারপোর্ট কিংবা সীমান্ত ফাঁড়ি থেকে ফিরিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটেনি।
ছবির ক্যাপশন-সিপিজে-লগো।
Posted ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
nyvoice24 | New York Voice 24