নিউইয়র্কে বিএনপি নেতা গিয়াসের প্রশ্ন

বৈষম্য-বিরোধী আন্দোলনের পরও কেন বৈষম্য?

এনওয়াই ভয়েস২৪ ডটকম, নিউইয়র্ক   প্রিন্ট
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫   সর্বশেষ আপডেট : ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

বৈষম্য-বিরোধী আন্দোলনের পরও কেন বৈষম্য?

শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন।

বহুল আলোচিত/সমালোচিত ১/১১ তে গঠিত কেয়ারটেকার সরকারের আমলে দূদক কর্তৃক দায়েরকৃত মামলায় দন্ডিত নীলফামারি-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে ফিরেও স্বস্তি পেলেন না। দীর্ঘ ১৭ বছর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাসকালে বিএনপির সকল কর্মসূচিতে সরব থাকা সাবেক এই এমপি মঙ্গলবার ঢাকায় ফিরেই প্রচলিত রীতি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু মাননীয় আদালত তা মঞ্জুর না করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়ার সংবাদ নিউইয়র্কে আসার পর বুধবার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে বসবাসরত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য এবং মার্কিন রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত গিয়াস আহমেদ এ সংবাদদাতার কাছে বলেন, ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হয়েছে বলে মনে করার কোন কারণ নেই। এখনো প্রশাসনের পরতে পরতে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অনুচরেরা রয়েছে বলেই বিএনপির জনপ্রিয় এই নেতার জামিন মিলেনি। গিয়াস আহমেদ বলেন, সেনাসমর্থিত মইন-ফখরুদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কেয়ারটেকার সরকারের বিএনপির বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের আতংকে প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন নিউইয়র্কে পালিয়ে এসেছিলেন। এরপর দীর্ঘ ১৭ বছরই তিনি বিএনপির রাজনীতির পরিপূরক সকল কর্মকান্ডে সরব ছিলেন। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার কোটা-বিরোধী আন্দোলনের সমর্থনেও আমাদের পাশে ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির শীর্ষস্থানীয় কয়েকজনকে পাশে নিয়ে ক্ষুব্ধচিত্তে গিয়াস আহমেদ অভিযোগ করেন, সাবেক এই এমপি প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ, তথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের খালাতো ভাই বলেই কী অন্তর্বর্তী সরকারের বিরাগভাজন হয়েছেন। গিয়াস বলেন, সেনাসমর্থিত মইন-ফখরুদ্দিন এবং পরবর্তীতে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে দূদকের মামলায় দন্ডিত জামাত-শিবির, বিএনপি-সহ অনেক রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন লাভ করেছেন। সাংবাদিক শফিক রেহমান এবং মাহমুদুর রহমানও মুক্তিলাভ করেছেন। অথচ সাবেক এই এমপিকে পাঠানো হলো কারাগারে।
নিউইয়র্কে বসবাসরত যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এম এ বাতিন-সহ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি পরিবারের সকলেই ক্ষুব্ধচিত্তে অবিলম্বে সাবেক এই এমপিকে নি:শর্তে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় দুর্বার আন্দোলনের বিকল্প থাকবে না বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

প্রাপ্ত সংবাদ অনুযায়ী, প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় বোনের ছেলে অর্থাৎ তারেক রহমানের খালাতো ভাই, প্রথমে কর ফাঁকির মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ-৯ কবির উদ্দিন প্রামাণিকের আদালতে মঙ্গলবার সকালে তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন। এরপর বিকেলে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ প্রদীপ কুমার রায়ের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে এ আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন। এ সময় তার সঙ্গে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীও ছিলেন।

জানা যায়, কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের কথিত ঐ সরকার তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে কর ফাঁকির মামলায় ২০০৮ সালে পৃথক ধারায় তিন বছর ও পাঁচ বছর-এই মোট আট বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন আদালত। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বিধায় তাকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া অবৈধ সম্পদের আরেকটি মামলায় ২০০৮ সালে তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন আদালত। উভয় রায়ের সময়েই তিনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। কারণ, মামলাগুলো ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়নতার নামান্তর-অভিযোগ বিএনপি নেতাদের। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর অর্থাৎ ষড়যন্ত্রমূলক মামলার রায় ঘোষণার দীর্ঘ ১৭ বছর পর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন।

Facebook Comments Box

Posted ৮:১৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫

nyvoice24 |

.

Address
New York
Phone: 929-799-2884
Email: nyvoice24@gmail.com
Follow Us