
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট
বুধবার, ০৭ মে ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট : ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ
ফাইল ছবি
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিয়ো গুতেরেজ পাকিস্তানের সাথে আন্তর্জাতিক সীমান্ত জুড়ে ভারতীয় সামরিক অভিযান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের দখল বিশ্ব সইতে পারবে না।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দফতরে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংকালে মুখপাত্রের মাধ্যমে মহাসচিব প্রদত্ত নোটে উভয় রাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহবানও জানিয়েছেন। এর আগেরদিন সোমবার মহাসচিব গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় সতর্কতা উচ্চারণ করেছিলেন যে, দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর মধ্যেকার দীর্ঘদিনের উত্তেজনা চরমে উঠেছে। মহাসচিব উভয় সরকারকে উত্তেজনা হ্রাসে ক’টনৈতিক তৎপরতাকে উৎসাহিত করে বলেছিলেন, সামরিক অভিযানে কখনো কোন সমস্যার সমাধান হতে পারে না। সে সময় মহাসচিব গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ২৬ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা ও বেশ কিছু মানুষকে আহত করার নিন্দা জানিয়েছিলেন এই বিশ্ব সংস্থার প্রধান। গুতেরেজে উল্লেখ করেছিলেন, বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় এবং যারা এহেন আচরণের জন্যে দায়ী তাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য এবং আইনী উপায়ে বিচারের আওতায় আনতে হবে। উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পাকিস্তানী সন্ত্রাসীরা ঐ হামলা চালিয়েছে বলে ভারত অভিযোগ করে আসছিল এবং সে কারণেই ভারতীয়রা পাকিস্তানে সামরিক অভিযান চালিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
২০১৯ সালে শুরু হওয়া উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ভারতীয় সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে এবং পাকিস্তান দাবি করেছে যে, তারা বেশ কটি ভারতীয় যুদ্ধ-বিমানকে ভ’পাতিত করেছে। ভারতীয়রা আক্রমণ চালিয়েছে পাকিস্তানের ৯টি স্থানে। আর এসব স্থান থেকেই সন্ত্রাসীরা কাশ্মিরে হামলা চালিয়েছিল বলে ভারতীয়রা নিশ্চিত হয়েছে। এবং ঐ সন্ত্রাসীরা ইসলামাবাদ প্রশাসনের সাথে যুক্ত বলেও ভারতীয়রা দাবি করছে। বিনা উস্কানীতে অসহায় মানুষের ওপর আক্রমণ চালানোর অভিযোগও উঠেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। এরফলে পারমানবিক শক্তিওয়ালা নিকট প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যেকার এই যুদ্ধ দক্ষিণ এশিয়ার অপর দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে এনডিটিভির তথ্য অনুযায়ী বুধবার প্রথম প্রহরে মাত্র ২৫ মিনিটের অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৯টি ‘জঙ্গি ঘাঁটিতে’ ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে অন্তত ৭০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করার দাবি করেছে ভারত। রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চালানো হয় এই অভিযান। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী যৌথভাবে এই হামলা চালায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ কোডনামে।
নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী বলেন, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে যে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হন, তার প্রতিক্রিয়াতেই এই আঘাত হানা হয়েছে।
ভারতের দাবি, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো পেহেলগামের হামলার জন্য দায়ী। যদিও ইসলামাবাদ বরাবরই এর সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে আসছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেন, “গত তিন দশকে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাকিস্তানে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, রিক্রুটমেন্ট ক্যাম্প এবং লঞ্চপ্যাড গড়ে তোলা হয়েছে। এই অভিযান ছিল সেই অবকাঠামো ধ্বংস করে ভবিষ্যতের হামলা রোধের উদ্দেশ্যে।”
বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ভূমিকা সিং এই অভিযানের ছবি দেখিয়ে বলেন, “বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। সবগুলো লক্ষ্য সফলভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।”
ছবি সংগৃহীত
অন্যদিকে ভারতের সাম্প্রতিক বিমান হামলার পাল্টা জবাবে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারী গোলাবর্ষণ চালিয়েছে, এতে এখন পর্যন্ত ভারতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশু এবং নারীও রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৩২ জন। বুধবার (৭ মে) বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
Posted ৯:১৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৭ মে ২০২৫
nyvoice24 | New York Voice 24