
বিশেষ সংবাদদাতা
প্রিন্ট
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট : ৮:২৭ অপরাহ্ণ
জর্জ টাউন ল’ স্কুলের সমাবর্তন-সমাবেশে প্রধান বিচারপতি জন রোবার্টস। ছবি-সংগ্রহ।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনের শাসন বিপন্ন এবং বিচার বিভাগ তছনছ হয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি জন রোবার্টস (৭০)। ১২ মে সোমবার ওয়াশিংটন ডিসি সংলগ্ন জর্জ টাউন ল’ স্কুলের সমাবর্তন-সমাবেশে বক্তব্যকালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহিত কিছু পদক্ষেপকে সংবিধানের পরিপন্থি হিসেবে অভিহিত করে সে সব নির্দেশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ প্রদানকারি বিচারকগণের বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, আইনের শাসন হুমকির মুখে নিপতিত হলে গণতন্ত্র প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য। একইসাথে সামজিক অস্থিরতাও বাড়তে থাকে। জন রোবার্টস বলেন, আইনের শাসনকে সমুন্নত রাখাটা জরুরী এবং এটা হচ্ছে গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। তবে তা শুধু কেতাবে থাকলে চলবে না, সকল কাজকর্মে তার প্রতিফলন ঘটতে হবে। আজকের বিশ্বের বাস্তবতায় আইনের শাসনের কতটা বরখেলাপ হচ্ছে-তা ভাবতেও অবাক লাগে। আগে কখনো এমনটি ঘটলেও তা লাগাতারভাবে চলেনি।
ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কটি ল’ফার্ম এবং বিচারপতিকে টার্গেট করার ঘটনাকে অবিশ্বাস্য ও উদ্বেগের কারণ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি । এমনকি আদালতের নির্দেশ অমান্যের ঘটনাও ঘটতে দেখা গেছে ট্রাম্পের এ মেয়াদে। আইনের প্রয়োগ এবং মার্কিন প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে শ্রেণী কক্ষে আরো বিস্তারিত আলোচনার অবকাশ রয়েছে এবং শিক্ষার্থীগণের মধ্যে আইন-আদালত সম্পর্কে বিদ্যমান রীতি-নীতি আরো গভীরভাবে অনুধাবনের পরিবেশ তৈরীর ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান বিচারপতি। ‘এটা সত্যি খুবই বাজে অবস্থা। আমাদের তরুণ সমাজ বিচারালয় এবং আইনের শাসনের ব্যাপারে সম্যক ধারণা পেতে পারেন-এমন পরিবেশ তৈরী করতেও সক্ষম হচ্ছি না। আদালত যে সবসময়ই সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারে তা যেমন নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়, আবার আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করার মত অবস্থাকেও চলতে দেয়া উচিত নয়। বিচারক যদি ভুল করেন তবে তার গঠনমূলক সমালোচনা অবশ্যই করা যাবে, তবে বিচারকের ওপর হামলে পড়ার মত ঘটনাকে মেনে নেয়া যায় না। এর পরিণতিও শুভ হয় না’-মন্তব্য প্রধান বিচারপতির। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ জেমস বোয়াসবার্গের একটি সিদ্ধান্তের পর ( যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার হওয়া দাগি আসামীদের এলসালভেদরের কারাগারে নিক্ষেপের পরিপেক্ষিতে) গত মার্চে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে আক্রমণ করে মতামত দিয়েছিলেন, এমনকি ঐ বিচারককে অভিশংসিত করার কথাও প্রকাশ্যে বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সে সময়েও নিরব থাকেননি প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ নিয়োজিত এই প্রধান বিচারপতি। বলেছিলেন, ‘বিচার বিভাগীয় কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে একমত হতে না পারলে সেই বিচারককে অভিশংসিত করার মধ্যে প্রকৃত অর্থে কোন সুফল আসতে পারে না এবং সেটিও সঠিক কোন পন্থা নয়।’ প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিয়োজিত বিচারপতি কিটাঞ্জি ব্রাউন জ্যাকসন সম্প্রতি এক বক্তব্যে ট্রাম্প কর্তৃক বিচারকগণকে হুমকি এবং হয়রানিমূলক পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এহেন আচরণ আমাদের গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণের সামিল এবং যা প্রকারান্তরে সংবিধান ও আইনের শাসনকে অবদমিত করে।’
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেণ, আইন-আদালত নিয়ে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক ঘটে এমন কোন মতামত প্রশাসন থেকে আসার আগে তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরিসমাপ্তি দরকার। এবং এটাই হচ্ছে উত্তম একটি উপায়।
Posted ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
nyvoice24 | New York Voice 24