হার্ভার্ডের মামলায় স্থগিতাদেশ: ক্ষুব্ধ ট্রাম্প বললেন

আরো কটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একই পদক্ষেপ নেয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক   প্রিন্ট
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫   সর্বশেষ আপডেট : ৯:১৪ পূর্বাহ্ণ

আরো কটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একই পদক্ষেপ নেয়া হবে

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার যে পরিকল্পনা করেছিল ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন, তা আদালত থামিয়ে দিলেও একইদিন অর্থাৎ শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারো হুংকার দিয়েছেন যে, একইধরনের পদক্ষেপ আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে নেয়া হবে। কারণ, ঐসব বিশ্ববিদ্যালয়েও ইহুদি-বিরোধী তথা গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দাসূচক আন্দোলনে আস্কারা দেয়া হচ্ছে বলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ধারনা। ভর্তির ক্ষেত্রে বর্ণ-বিদ্বেষের অভিযোগ উঠেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের টার্গেটেড বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি, রচেস্টার ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ক্যালটেক, কলম্বিয়া, জন্স হপকিন্স, কারনেগী মেলোন প্রভৃতি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বিপুলসংখ্যক বিদেশী ছাত্র রয়েছেন।
উল্লেখ্য, হার্ভার্ডের এক মামলার প্রেক্ষিতে সংক্ষিপ্ত এক রায়ে বস্টনের ডিস্ট্রিক্ট জজ অ্যালিস বারাস এ সংক্রান্ত ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) পদক্ষেপ কার্যকরে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। বৃহস্পতিবার ডিএইচএস হার্ভার্ডের ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম সার্টিফিকেশন’ বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল। একে আইন ও মতপ্রকাশের অধিকারের ‘নির্লজ্জ লঙ্ঘন’ অভিহিত করে শুক্রবার বস্টনের আদালতে মামলা করে দেয় হার্ভার্ড। তাদের ওই মামলার প্রেক্ষিতেই বিচারক বারাস এ সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, এন্টিসেমেটিজমের বিরুদ্ধে লড়াই এবং নিয়োগ ও ভর্তি প্রক্রিয়া বদলাতে হার্ভার্ড পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

“কলমের এক খোঁচায় সরকার হার্ভার্ডের শিক্ষার্থী বহরের এক চতুর্থাংশকে মুছে দিতে চাইছে, এ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে,” মামলায় উল্লেখ করেছে হার্ভার্ড।

এ নিয়ে এক চিঠিতে হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বার লিখেছিলেন, “বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া সরকারের চলমান পদক্ষেপের অংশ, যা হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে একহাত নেয়ার জন্য করা হচ্ছে, কেননা আমরা আমাদের একাডেমিক স্বাধীনতা হারাতে চাইনি এবং আমাদের পাঠ্যক্রম, শিক্ষক ও ছাত্রসমাজের ওপর ফেডারেল সরকারের অবৈধ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হইনি।”

এপ্রিলেই ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাধারী কয়েকজনের তথ্য চেয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, তা না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ হারাতে পারে।

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ফেরার পর থেকেই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে তার প্রশাসনের টানাপড়েন শুরু হয়। হার্ভার্ডের পাশাপাশি নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ও কথিত ‘এন্টিসেমেটিজমের’ অভিযোগে ট্রাম্প প্রশাসনের নিশানায় পরিণত হয়েছে। রিপাবলিকান প্রশাসনের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ‘চরম বামপন্থি, মার্ক্সবাদী ও মার্কিন-বিরোধী’ চিন্তাধারায় প্রভাবিত হয়ে পড়েছে। হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, তারা শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়ায় জাতিগত পরিচয়কে প্রাধান্য দিচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুযোগ দিয়ে ইহুদি শিক্ষার্থীদের বৈষম্যের শিকার হতে দিচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান এবং চুক্তি জব্দ বা বাতিল করে। সবশেষ গত সোমবার ইহুদি শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ ও জাতিগত হয়রানির অভিযোগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ৬০ মিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব সেবা মন্ত্রণালয় (এইচএইচএসডি)।

ছবির ক্যাপশন-হার্ভার্ড
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

Facebook Comments Box

Posted ৯:১৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

nyvoice24 |

Address
New York
Phone: 929-799-2884
Email: nyvoice24@gmail.com
Follow Us