নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট
শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট : ১১:২০ পূর্বাহ্ণ
নিউইয়র্ক সিটির ভোটারের ১২% হলেন মুসলমান। এই ভোটারেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে মেয়রসহ সিটির গুরুত্বপূর্ণ সকল আসনেই বিজয়ের ক্ষেত্রে নেয়ামক শক্তিতে পরিণত হতে পারবেন অর্থাৎ নিজেদের অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে কখনোই অবহেলা-অবজ্ঞার সম্মুখীন হবেন না। ২৯ মে বৃহস্প্রতিবার অপরাহ্নে জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায় অনুষ্ঠিত এক সমাবেশের বক্তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে এই প্রথম একজন মুসলমান ডেমক্র্যাটিক পার্টি থেকে মেয়র পদে মনোনয়নের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এবং সাম্প্রতিক প্রায় সকল জনমত জরিপেই তার সম্ভাবনা উজ্জল বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। সে আলোকে সকল মুসলমান ভোটার ঐক্যবদ্ধ থাকলে দক্ষিণ এশিয়ান ভোটারের দৃষ্টি আকর্ষণেও সক্ষম হবেন জোহরান মামদানি। ‘অ্যাম্পাওয়ারিং মুসলিমস : আওয়ার চয়েস ফর নিউইয়র্ক সিটি ইলেকশন’ শিরোনামের এই সমাবেশ থেকে সকলে সমস্বরে উচ্চারণ করেন জোহরান মামদানিকে বিয়য়ের মুকুট পরাতে সকলেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করবেন। উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলীর মেম্বার হিসেবে শুধু মুসলিম কম্যুনিটিই নয়, অভিবাসী সমাজে জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্বে পরিচিতি লাভকারি জোহরান মামদানির মত সিটির পাবলিক এডভোকেট পদে পুনরায় প্রার্থী হবার দৌড়ে অবতীর্ণ জুমানি উইলিয়ামস এবং সিটি কম্পট্রোলার জাস্টিন ব্র্যাননকেও দ্ব্যর্থহীন সমর্থন দিয়েছেন মুসলিম আমেরিকানরা।
রাইজ আপ এনওয়াইসি, মুসলিম ভোট প্রজেক্ট, মুসলিম অ্যাকশন কোয়ালিশন, মুসলিম কম্যুনিটি ফোরাম, মুনা এপিজে অ্যাকশন, বাংলাদেশী আমেরিকান এডভোকেসি গ্রুপ (বাগ), জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি প্রভৃতি সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে সিটি মেয়রসহ গুরুত্বপূর্ণ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণদের প্রকাশ্য সমর্থন দানের ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। নানাবিধ কারণে মুসলিম আমোরিকানদের মধ্যে গড়ে উঠা এই ঐক্য অটুট রেখে স্টেট পার্লামেন্ট এবং কংগ্রেসের নির্বাচনেও পছন্দের প্রার্থীদের বিজয়ে কাজের অঙ্গিকারও করেছেন বক্তারা।

সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন জ্যামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। ছবি-এনওয়াইভয়েস২৪ডটকম।
এ সময় বক্তব্যকালে জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন তথা জেবিবিএর প্রেসিডেন্ট ও মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদ, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার এবং বাংলাদেশ সোসাইটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারপার্সন শাহনেওয়াজ বলেছেন, ২৪ জুন নিউইয়র্ক সিটির মেয়রসহ বিভিন্ন আসনে ডেমক্র্যাট পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচনে সত্যিকার অর্থে যারা মুসলমান তথা অভিবাসী সমাজের বন্ধু তাদেরকে বিজয় দিতে হবে। এটা সময়ের দাবি। তারা আরো উল্লেখ করেছেন, সিটিজেনশিপ নিয়েছেন কিন্তু ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হননি , তাদের সময়ক্ষেপনের অবকাশ নেই। সময় ফুরিয়ে যায়নি। সত্বর তালিকাভুক্ত হউন এবং কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন। আগাম ভোটের সুযোগও নিতে পারেন সকলেই। উল্লেখ্য, দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের এ নির্বাচনে বিজয়ী ডেমক্র্যাটকে লড়তে হবে রিপাবলিকানসহ অন্য প্রার্থীদের সাথে ৪ নভেম্বরের চ’ড়ান্ত নির্বাচনে।

এ সময় বক্তব্যকালে বাংলাদেশী আমেরিকান এডভোকেসী গ্রুপ তথা বাগের প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদীন বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর সিটির পাবলিক স্কুলসমূহে দুই ঈদের দিন ছুটির দাবি আদায় হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে হালাল খাদ্যও পরিবেশন করা হচ্ছে। এমনকি শুক্রবার মসজিদসমূহের মাইকে আজান প্রদানের দাবিও পূরণ হয়েছে। এ অবস্থায় জোহরান মামদানির মত পরীক্ষিত নেতৃত্বকে মেয়র হিসেবে বিজয়ী করতে পারলে বিশ্বের রাজধানী খ্যাত নিউইয়র্ক সিটিতে মুসলিম আমেরিকানদের অবস্থানকে আরো সুসংহত করা সম্ভব হবে।
দীর্ঘ ৪০ বছরের অধিক সময় যাবত এই সিটিতে বসবাসরত তারেক রহমান, আরমান চৌধুরী, আফতাব মান্নান, ডা. আব্দুস সালাম মুসা, সাবির খান, ডা. জুন্নন চৌধুরী, শামসুল হক প্রমুখ এ সময় এ সংবাদাতার সাথে আলাপকালে বলেছেন, এবারের নির্বাচনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই পছন্দের প্রার্থীদের বিজয় দিয়ে নিজেদের নিরাপত্তাকে সুসংহত করার পথ বেয়ে সকলের আমেরিকান আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের পথকেও সুগম করতে হবে। এজন্যে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
Posted ১১:২০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
nyvoice24 | New York Voice 24