বিশেষ সংবাদদাতা
প্রিন্ট
শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট : ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ
পুনরায় স্টুডেন্ট ভিসা ইস্যুর নির্দেশ দিলো ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ভিসা প্রার্থীর সোস্যাল মিডিয়া যাচাইয়ের পরই ভিসা ইস্যু করা হবে। বুধবার ১৮ জুন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সকল দূতাবাসে নয়া এই নির্দেশ প্রেরণ করা হয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্কো রুবিও। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যে হুমকি, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সাথে জড়িত অথবা সমর্থক, অথবা যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের কঠোর সমালোচক বলে কোন তথ্য সোস্যাল মিডিয়ায় পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট বিদেশীকে স্টুডেন্ট ভিসার অযোগ্য বিবেচনার নির্দেশনা রয়েছে সেখানে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক সময়ে গ্জাায় ইসরায়েলি হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদে তুমুল বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশগ্রহণকারি ও আয়োজকদের অধিকাংশই ছিলেন ‘ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট’রা। এছাড়া যুদ্ধ বিরোধী এবং বর্ণবৈষম্য বিরোধী আচরণের প্রতিবাদ সমাবেশেও ‘ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট’দের আধিক্য পরিলক্ষিত হয়েছে। এমন অবস্থাকে চলতে দিতে নারাজ ট্রাম্প প্রশাসন গত মাসের শেষে স্টুডেন্ট ভিসা প্রার্থীগণের ইন্টারভিউ স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিল। উল্লেখ্য, ২০২৪ অর্থ বছর ৪ লাখের অধিক স্টুডেন্ট ভিসা ইস্যু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নয়া এই যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় চলতি শিক্ষা বছর খুব কমসংখ্যক স্টুডেন্ট ভিসা ইস্যুর আশংকা করা হচ্ছে। দূতাবাসসমূহে প্রেরিত নির্দেশনা অনুযায়ী আবেদনকারির সোস্যাল মিডিয়া বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করতে হবে। এজন্যে লাগবে অতিরিক্ত সময়। এ ধরনের আরেকটি কর্মসূচি চালু করা হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা, অথবা প্রযুক্তি কিংবা কোন গবেষণা প্রকল্পে অংশগ্রহণে ইচ্ছুকদের জন্যেও। আর এমন পদক্ষেপ অবলম্বন করা হয়েছে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আন্দোলন-সমাবেশ আয়োজনের পর থেকেই। এমন কর্মসূচির নেপথ্য সংগঠকদের ভিসা বাতিলের ঘটনাও ঘটেছে।
ইউএসসিআইএস (ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপ সার্ভিস) সূত্রে জানা গেছে যে, গ্রীণকার্ড কিংবা সিটিজেনশিপের আবেদনকারিগণের সোস্যাল মিডিয়াও একইভাবে যাচাইয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আবেদনের ফরমে সোস্যাল মিডিয়ার লিঙ্ক উল্লেখ করতে হবে।
এফ, এম এবং জে ভিসা আবেদনকারিগণের সোস্যাল মিডিয়া ব্যাপকভাবে যাচাই-বাছাইয়ের এহেন নির্দেশনার সমালোচনা করে ‘আমেরিকান কাউন্সিল অন এডুকেশন’র সরকার সম্পর্কিত চীফ অব স্টাফ সারাহ স্প্রিটজার ১৮ জুন বলেছেন, আশা করছি উচ্চ শিক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে আগ্রহীদের মধ্যে এ প্রক্রিয়ায় হতাশা সৃষ্টি হবে না। আর এমন প্রক্রিয়াকে আমরা যেন ভিসা নাকচের অবলম্বন হিসেবে বিবেচনা না করি। কারণ, উচ্চ শিক্ষা শেষে মেধাবির অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্রে বসতি গড়েন অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন-কল্যাণেই মেধার বিনিয়োগ ঘটান।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমেরিকা তথা শিক্ষাঙ্গণকে নিরাপদ রাখার মধ্যদিয়ে একুশ শতকের উপযোগী একটি পরিক্রমায় শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ সুরক্ষায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো আন্তরিককতার সাথে চেষ্টা করছেন।
এদিকে, ‘দ্য ন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব ফরেইন স্টুডেন্ট এডভাইজার’ তথা নাফসার (National Association of Foreign Student Advisers) পাবলিক পলিসি সম্পর্কিত উপ-নির্বাহী পরিচালক জিল অ্যালেন সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন যে, স্টুডেন্ট ভিসা ইস্যুর কার্যক্রম আবারো শুরু হলো-এটি সকলের জন্যেই স্বস্তিদায়ক। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতির মধ্যদিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদা সমুন্নত থাকে এবং একইসাথে মার্কিন অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়ে। কারণ, বিদেশী শিক্ষার্থীর প্রায় সকলেই পুরো বেতনে অধ্যয়ন করেন। থাকা-খাওয়ার খরচও উচ্চ হারে ব্যয় করেন।
Posted ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
nyvoice24 | New York Voice 24