বিশেষ সংবাদদাতা
প্রিন্ট
মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট : ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ
গত ৬ মাসে বেশ কয়েক ডজন বাংলাদেশীসহ ৬ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ‘ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট’ ভিসায় তারা যুক্তরাষ্ট্রে এসে এমন সব কাজে জড়িয়ে পড়েছিলেন যা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির পরিপন্থি, এমনকি অনেকে হামাসের মত সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্যে তহবিল সংগ্রহ করেছেন। ভার্সিটি-কলেজ ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষী আচরণ ছাড়াও নেশাগ্রস্ত হয়ে গাড়ি চালিয়েছেন, কেউ কেউ ভিসার রীতি লংঘন করেছেন, আবার অনেকে শিক্ষাঙ্গনে অনুপস্থিত থেকে রেস্টুরেন্ট/খুচরা দোকানে কাজ করতেন। ১৮ অগাস্ট গণমাধ্যমকে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ভিসা বাতিলকারিদের মধ্যে প্রায় ৩০০ জনই সন্ত্রাসী সংগঠন ‘হামাস’র জন্যে তহবিল সংগ্রহ করতেন এবং হামাসের নির্দেশনা অনুযায়ী ভার্সিটি প্রাঙ্গনে অস্থিরতা তৈরী করেছিলেন। ৪ হাজারের মত ‘ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ভিসা’ বাতিল করা হয়েছে কারণ তারা ভিসার রীতি লংঘন করেছিলেন। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে মার্কিন শিক্ষাঙ্গনে তুমুল বিক্ষোভ শুরুর পরই ট্রাম্পের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্কো রুবিও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এহেন বিক্ষোভে নেতৃত্ব এবং সাংগঠনিক তৎপরতায় লিপ্তদের ভিসা বাতিলের। কারণ, এহেন আন্দোলনকে তারা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের পরিপন্থি মনে করছেন। তবে অভিযোগ রয়েছে যে, দ্বিতীয় মেয়াদের জন্যে ক্ষমতা গ্রহণের দিন থেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসন-বিরোধী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ‘ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট’দেরকেও টার্গেট করা হয়েছে। নানা ছুতানাতায় ভিসা বাতিল এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কারের খড়গ নেমে এসেছে শিক্ষার্থী ভিসাধারীদের বিরুদ্ধে। ট্রাফিক আইন লংঘনের মামুলি অভিযোগের জন্যেও বাতিল করা হয়েছে অনেক শিক্ষার্থীর ভিসা। এরফলে যুক্তরাষ্ট্রের সেরা সকল শিক্ষাঙ্গনেই এক ধরনের ভীতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এহেন আচরণকে চ্যালেঞ্জ করে বিভিন্ন আদালতে আইনী লড়াই অব্যাহত থাকলেও স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল এবং অনেক দেশেই স্টুডেন্ট ভিসা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অঘোষিত স্থবিরতা অব্যাহত রয়েছে।
‘প্রেসিডেন্ট’র এলায়েন্স অন হাইয়ার এডুকেশন এ্যান্ড ইমিগ্রেশন’র সিইও মরিয়াম ফেল্ডব্লাম এহেন আচরণের নিন্দা জানিয়ে গণমাধ্যমে বলেছেন, ৬ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর পরিপন্থি। এভাবে মেধাবিগণকে হতাশ করা হচ্ছে এবং প্রকারান্তরে তা যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়নেও বাধার দেয়াল তৈরী করবে। কারণ, কৃতিত্বের সাথে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্নের পর অধিকাংশ বিদেশীই যুক্তরাষ্ট্রের বসতি গড়েছেন এবং এই আমেরিকাকে বিশ্বের সেরা দেশে পরিণত করতে নিরন্তরভাবে অবদান রাখছেন। অপরদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ভিসা বাতিল হয়েছে এমন শিক্ষার্থীর অনেকেই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের পক্ষে কাজ করছিলেন। এছাড়া চার হাজারের মত শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে ভিসার নিয়ম লংঘনের জন্যে। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছিল যে, তারা এক হাজারের মত ভিসা বাতিল করেছেন। কিন্তু এখোন দেখা যাচ্ছে তা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। এরফলে শিক্ষাঙ্গনে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।
Posted ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫
nyvoice24 | New York Voice 24