অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে নিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

অনলাইন ডেস্ক   প্রিন্ট
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫   সর্বশেষ আপডেট : ৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ

অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে নিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চার্জশিটে নাম আসা ২৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার মধ্যে কর্মরত ও এলপিআর-এ থাকা ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আগামী ২২ অক্টোবর তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার বিষয়ে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসের মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মামলা–সংক্রান্ত বিষয়ে সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের তথ্য:

মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান জানান, মোট ১৬ জনকে সেনা হেফাজতে আসার জন্য বলা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে হেফাজতে রয়েছেন। হেফাজতে থাকা এই কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৪ জন কর্মরত এবং একজন এলপিআর-এ (Leave Preparatory to Retirement) থাকা কর্মকর্তা।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা: গত বুধবার (৮ অক্টোবর) মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক ও বর্তমান ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল ২১ অক্টোবরের মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর হাজির করার নির্দেশ দেন।

মামলার চিত্র: তিনটি মামলায় মোট ২৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন অবসরে আছেন, একজন এলপিআর-এ এবং ১৫ জন কর্মরত রয়েছেন।

পলাতক কর্মকর্তার বিষয়ে পদক্ষেপ:

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে মেজর জেনারেল কবির আহাম্মদ না জানিয়ে অবৈধভাবে ছুটিতে গেছেন। তাঁকে যেন দেশ ছাড়তে না পারেন, সেজন্য বিমানবন্দরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর অবস্থান:

মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, “সেনাবাহিনী সকল অপরাধের বিচারের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে এবং আদালতের রায় মেনে নেবে।” তিনি উল্লেখ করেন, টিভিতে স্ক্রল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেই ১৫ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “সেনাবাহিনীতে থাকার সময় তাঁরা অন্যায় করেননি, বিভিন্ন বাহিনীতে তাঁদের যখন পাঠানো হয়, তখন তাঁরা এসব অপরাধে জড়ান।”

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে আইনি ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে। আগামী ২২ অক্টোবর হেফাজতে নেওয়াদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার বিষয়ে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কর্মরত অভিযুক্ত কর্মকর্তারা:

যেসব কর্মরত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন: মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ (পলাতক), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কর্নেল কে এম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।

Facebook Comments Box

Posted ৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

nyvoice24 |

Address
New York
Phone: 929-799-2884
Email: nyvoice24@gmail.com
Follow Us