ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশে এবারও শীর্ষে বাংলাদেশিরা

অনলাইন ডেস্ক   প্রিন্ট
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫   সর্বশেষ আপডেট : ৯:৩৪ পূর্বাহ্ণ

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশে এবারও শীর্ষে বাংলাদেশিরা

ফাইল ছবি

ইউরোপে অবৈধ পথে সামগ্রিক অভিবাসন ২২ শতাংশ কমলেও, মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুট ব্যবহার করে ইউরোপে প্রবেশকারীদের তালিকায় আবারও শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের নাগরিকরা। ইউরোপীয় সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ফ্রনটেক্সের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে মোট ৫০ হাজার ৮৫০ জন বাংলাদেশি ইউরোপে প্রবেশ করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ফ্রনটেক্সের পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনের মূল তথ্যগুলো (পয়েন্ট আকারে):

১. শীর্ষ অবস্থানে বাংলাদেশ:

মোট অনুপ্রবেশ: জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪০০ জন অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন।

মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুট: এই রুট দিয়ে প্রবেশকারীদের মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকরা শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশিদের সংখ্যা: এই সময়ে ৫০ হাজার ৮৫০ জন বাংলাদেশি এই পথ পাড়ি দিয়েছেন, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি।

মাসিক চিত্র: শুধুমাত্র সেপ্টেম্বর মাসেই মধ্য ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন ৮ হাজার ৪৬ জন।

২. অবৈধ প্রবেশে সামগ্রিক চিত্র:

সামগ্রিক হ্রাস: কঠোর নজরদারি ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার কারণে সামগ্রিকভাবে অবৈধ অনুপ্রবেশ ২২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

শীর্ষ তিন: অবৈধ পথে ইউরোপে প্রবেশে শীর্ষ তিনটি অবস্থানে থাকা নাগরিকরা হলেন— বাংলাদেশি, মিসরীয় এবং আফগান।

প্রধান রুট: মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় সাগর পথকে এখনও ইউরোপে অনিয়মিত প্রবেশের প্রধান রুট হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। পুরো ইউরোপে মোট অবৈধ প্রবেশকারীদের প্রায় ৪০ শতাংশই এই রুট দিয়ে ইতালিতে প্রবেশ করেছে।

৩. রুটের ভিন্নতা ও প্রবণতা:

হ্রাস পাওয়া রুট: পশ্চিম আফ্রিকান রুট (৫৮ শতাংশ), পশ্চিম বলকান রুট (৪৭ শতাংশ), পূর্ব ইউরোপের স্থলসীমান্ত (৩৬ শতাংশ) এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় রুট (২২ শতাংশ) দিয়ে অনুপ্রবেশ হ্রাস পেয়েছে।

বৃদ্ধি পাওয়া রুট: পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অনিয়মিত প্রবেশ ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার বেশিরভাগই আলজেরিয়া থেকে যাত্রা করা অভিবাসী।

৪. মানবিক সংকট ও নতুন কৌশল:

মৃত্যুর সংখ্যা: আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে কমপক্ষে ১ হাজার ২৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জীবনের ঝুঁকি: মৃত্যুর এই সংখ্যা প্রমাণ করে, ইউরোপে পৌঁছানোর জন্য মানুষ এখনও জীবনের ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করছে না।

যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা: ফ্রান্স হয়ে ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে যুক্তরাজ্যের দিকে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৩০০ জন নাগরিক যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন।

পাচারকারীদের কৌশল: বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউরোপের সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি ও আফ্রিকার কিছু দেশের কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের ফলেই পাচারকারীরা নতুন কৌশল নিচ্ছে, যা অভিবাসীদের জন্য ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে।

Facebook Comments Box

Posted ৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

nyvoice24 |

Address
New York
Phone: 929-799-2884
Email: nyvoice24@gmail.com
Follow Us