নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট : ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ
টাইমস স্কোয়ারে বিশাল বিক্ষোভের একাংশ। ছবি-সংগ্রহ।
স্মরণকালের বৃহত্তম বিক্ষোভ সমাবেশ হলো ১৮ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট টাম্পের কর্র্তৃত্ববাদি শাসনের নিন্দা ও প্রতিবাদে। নিউইয়র্ক, বস্টন, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, লসএঞ্জেলেস, ওয়াশিংটন ডিসি, ওরেগণ, ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, শিকাগো, মিশিগান, ডালাস, হিউস্টন, মিনেসোটা, ওহাইয়ো, নর্থ ক্যারলিনা, সিয়াটল প্রভৃতি স্থানে লাখো জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল-সমাবেশসহ প্রায় ২৭০০টি স্থানে একযোগে এই কর্মসূচি পালিত হওয়ায় সমগ্র জনগোষ্ঠি যেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আয়োজকদের অন্যতম প্রগতিশীল সংগঠন ইনডিভিজিবলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা লিয়া গ্রিনবার্গ। তিনি উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক বিরোধীদের ক্ষেত্রে ট্রাম্প যেভাবে বিচার বিভাগকে কাজে লাগাচ্ছেন, অবৈধ অভিবাসীদের সামরিক কায়দায় দমনপীড়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ন্যাশনাল গার্ডের সেনা পাঠানোকে ঘিরে অনেক মার্কিনি, বিশেষ করে মতাদর্শগতভাবে বাম ঘরানার নাগরিকদের মধ্যে যে ক্রমবর্ধমান অস্বস্তি শনিবারের বিক্ষোভে মূলত তারই প্রতিফলন দেখা গেছে।
ট্রাম্প তার নীতিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে প্রশাসনজুড়ে যেভাবে অনভিজ্ঞ ও অনুগত লোকদের বসাচ্ছেন এবং গণমাধ্যম, ল’ ফার্ম ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর যে ধরনের চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছেন তা নিয়েও দিন দিন অসন্তোষ বেড়েছে।
ট্রাম্পের ‘কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা ও লাগামছাড়া দুর্নীতির’ প্রতিবাদে ‘নো কিংস’ বা ‘রাজা মানি না’ সমাবেশগুলোতে অংশ নিতে বিভিন্ন বয়সী এবং সকল বর্ণের কয়েক কোটি আমেরিকানকে রাস্তায় নেমে আসতে দেখা গেছে। “শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকারকে কাজে লাগানো এবং ‘আমাদের রাজা নেই’ বলার চেয়ে বেশি আমেরিকান আর কিছু হতেই পারে না,” বলেছেন ইনডিভিজিবলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা লিয়া গ্রিনবার্গ।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের ভিড়ে নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার ভরে উঠেছিল। এক লাখের বেশি মানুষ এই সিটির ৫টি বরোতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন আয়োজকরা।
সব মিলিয়ে সমাবেশগুলোকে মনে হয়েছে উৎসবমুখর; বেশিরভাগ জায়গায় বাতাসে ফোলানো নানান খেলনা চরিত্র দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীদের অনেকের শরীরেও ছিল নানা ধরনের সাজপোশাক। বিক্ষোভে সব বয়সী সব বর্ণের মানুষের উপস্থিতিই সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে। বাবা-মা’রা স্ট্রোলারে করে নিয়ে এসেছেন এখনও হাঁটতে না শেখা শিশুদের, তাদের পাশেই ছিলেন অবসরপ্রাপ্তরা, অনেকের সঙ্গে ছিল খাঁচায় রাখা পোষা প্রাণীও।

লসএঞ্জেলেসে বিশাল বিক্ষোভের একাংশ। ছবি-সংগ্রহ।
নো কিংস র্যালি প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন কংগ্রেসের স্পিকার (রিপাবলিকান) মাইক জনসন। সোস্যাল মিডিয়া ‘এক্স’ এ তিনি উল্লেখ করেছেন এসব করছি ‘কম্যুনিস্টরা’। এখন আমরা নিশ্চিত যে সমাবেশগুলোর জন্যে তহবিল দিয়েছে ‘সরোস’ এবং স্পন্সর করেছে কম্যুনিস্ট পার্টি, ইউএসএ। সাথে রয়েছে বামপন্থি আরো কটি দল। যাকে বলা যেতে পারে ‘হেইট আমেরিকা র্যালি’। এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আয়োজকরা তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট ভাবছেন যে তিনি যা করছেন তাই সঠিক। তবে আমেরিকায় আমাদের কোন রাজা ছিল না, এখনো নেই। আমরা দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলা, নৃশংসতাকে প্রশ্রয় দিতে চাই না। আর সেজন্যেই গত জুনের তুলনায় এবারের কর্মসূচিতে আমেরিকানদের অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে, অনেক বেশী শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কারণ, আমেরিকা গড়ে উঠেছে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্যে, স্বৈরশাসকের জন্যে নয়।
Posted ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
nyvoice24 | New York Voice 24