নিউইয়র্কে কমিউনিটির বিরল ঐক্য

বিতর্কের মাধ্যমে স্টেট এ্যাসেম্বলীতে একক প্রার্থী হলেন জাকির চৌধুরী

ব্রঙ্কস সংবাদদাতা   প্রিন্ট
বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫   সর্বশেষ আপডেট : ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ

বিতর্কের মাধ্যমে স্টেট এ্যাসেম্বলীতে একক প্রার্থী হলেন জাকির চৌধুরী

বিতর্কে অংশ নেন (বাম থেকে) জাকির চৌধুরী, জামাল হুসেইন এবং ইমরান শাহ রন। ছবি-এনওয়াইভয়েস২৪ ডটকম।

নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসে বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটি রাজনৈতিক ঐক্যের এক বিরল নজির স্থাপন করেছে। ২০ অক্টোবর সোমবার সন্ধ্যায় ব্রঙ্কসের গোল্ডেন প্যালেস পার্টি হলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী বিতর্ক ও ইলেকট্রনিক ভোটাভুটিতে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-৮৭’র সম্ভাব্য তিন বাংলাদেশি-আমেরিকান প্রার্থীর মধ্য থেকে জাকির চৌধুরী অধিকাংশ ভোটারের সমর্থন লাভ করায় অপর দু’জন ইমরান শাহ রণ এবং শেখ জামাল হোসেন সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

‘ব্রঙ্কস বাংলাদেশি কমিউনিটি-ইউনিফায়েড ক্যান্ডিডেট কমিটি’ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনজনই নিজের অভিজ্ঞতা, কমিউনিটির জন্য কাজ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। দুই ঘণ্টাব্যাপী এই প্রাণবন্ত বিতর্কে মডারেটর ছিলেন লেখক, সাংবাদিক ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা শামীম আল আমিন।

বিতর্ক শেষে ইলেকট্রনিক ভোটের মাধ্যমে মোট ৫৫ জন ভোটার তাঁদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করেন। প্রতিটি প্রার্থী নিজ নিজ পক্ষ থেকে ১০ জন করে ভোটার আমন্ত্রণ জানান, বাকি ২৫ জন ছিলেন আয়োজক কমিটির সদস্য।
ভোট গণনার পর সিপিএ জাকির চৌধুরী বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত হন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ফলাফল ঘোষণার পর বাকি দুই প্রার্থী ইমরান এম. শাহ ও জামাল হুসেইন তা উষ্ণ অভিনন্দনের মাধ্যমে মেনে নেন এবং জাকির চৌধুরীকে পূর্ণ সমর্থনের ঘোষণা দেন।

এই রাজনৈতিক সৌহার্দ্যপূর্ণ দৃশ্যটি উপস্থিত সকলের জন্য ছিল অনুপ্রেরণাদায়ক, যা প্রায়শই অভিবাসী কমিউনিটিতে দেখা যায় না। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের উদ্যোগ কমিউনিটির রাজনৈতিক ঐক্য ও শক্তিকে আরও সুসংহত করবে।

অনুষ্ঠানটি ছিল শুধুমাত্র একটি বিতর্ক বা ভোটাভুটি নয় বরং ছিল একটি উৎসবমুখর মিলনমেলা। প্রার্থীদের আন্তরিক অংশগ্রহণ, মডারেটরের দক্ষ নেতৃত্ব এবং সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে করে তোলে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বার বার সেখানে বলা হয়, এই বিতর্ক নিউইয়র্ক বোর্ড অব ইলেকশনের অন্তর্ভুক্ত কোন আয়োজন নয়। এটি ছিল কমিউনিটির নিজস্ব উদ্যোগ। তবে গণতান্ত্রিক চর্চা ও রাজনৈতিক সচেতনতার দৃষ্টান্ত হিসেবে এটি অভিবাসী কমিউনিটির মধ্যে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই ঐতিহাসিক উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নে কাজ করেছেন আব্দুল মুমিন, রিয়াজ উদ্দিন কামরান, আব্দুস শহীদ, মোহাম্মদ আব্দুল গফ্ফার চৌধুরী, আব্দুল হাশিম হাসনু, নুরুস সামাদ চৌধুরী, আহাদ আলী, কাওসারুজ্জামান কয়েস, আলমাস আলী, শেখ আল মামুন, চার্লি আকবর (আলী), সৈয়দ শারফিন মোর্শেদ, ইব্রাহীম বারভূঁইয়া, মোহাম্মদ এন মজুমদার, ফরিদা ইয়াসমিন, মাসুদ উর রহমান, বিলাল ইসলাম, আব্দুল চৌধুরী, ড. আব্দুস সবুর, মোহাম্মদ আলী, রওশন আরা নিপা, আহবাব চৌধুরী, জুনায়েদ চৌধুরী, মোহবুব আলম এবং মুজাম্মেল হোসেন মুরাদ।

এ ছাড়া বিতর্কে ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাসুদ উর রহমান, মোহাম্মদ এন মজুমদার এবং আব্দুল চৌধুরী।

উল্লেখ্য, ৮৭তম ডিস্ট্রিক্টে বর্তমানে দায়িত্বে আছেন অ্যাসেম্বলিওম্যান কারিনেস রেয়েস, যিনি ২০১৯ সাল থেকে এই পদে আছেন এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৯৪ শতাংশ ভোটে জয়ী হন। এবার তাঁর বিপক্ষে লড়াইয়ে নামছেন বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটির সম্মিলিত সমর্থন পাওয়া প্রার্থী সিপিএ জাকির চৌধুরী। আরো উল্লেখ্য, বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় কম্যুনিটির এই ঐক্য অটুট থাকলে জাকির চৌধুরীর বিজয় ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সামনের বছর নভেম্বরে। বর্তমান এ্যাসেম্বলীওম্যান ডেমক্র্যাট হওয়ায় জাকির চৌধুরীকে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচনে অবতীর্ণ হতে হবে রেয়েসের সাথে।

Facebook Comments Box

Posted ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

nyvoice24 |

Address
New York
Phone: 929-799-2884
Email: nyvoice24@gmail.com
Follow Us